‘আমেরিকায় মৃত্যু লাখ ছুঁতে চলেছে, এক অমেয় ক্ষতি’।
এই হলো শিরোনাম। নিচে সংক্ষিপ্ত মন্তব্য। ‘তারা শুধু তালিকার নাম নন। তারা আমরাই।’ তারপর তাদের নাম। সঙ্গে একটি–দুটি কথায় পরিচয়। এভাবেই প্রথম পাতা জুড়ে শুধু তাদের নাম, যা নিছক ‘তালিকা’ নয়। নামের সারি প্রথম পাতা ছাড়িয়ে চলে গেছে ভেতরের পাতায়। রোববার, ২৪ মে–র দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস–এর প্রথম পাতাটি এরকমই।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণে এক ভয়ঙ্কর মাইলস্টোন ছুঁতে চলেছে আমেরিকা। মৃতের সংখ্যাটা পৌঁছে যাচ্ছে ১ লাখে (রোববার এই প্রতিবেদন লেখার সময় সংখ্যাটা ৯৮,৭৪০)। মৃতদের মধ্যে থেকে ১০০০ জনের নাম–পরিচয় প্রকাশ করল নিউ ইয়র্ক টাইমস। বলা যায়, এঁরা লক্ষ প্রয়াত জনের প্রতিনিধি। দেশ জুড়ে মৃতদের সম্পর্কে যে শোকসংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার থেকে তুলে আনা হয়েছে এই পরিচয়। যার গভীরে রয়েছে প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা। বলা হয়েছে, ‘এখানে ১,০০০ মানুষ মোট মৃত্যুর শুধুই ১ শতাংশ। কেউই নিছক সংখ্যা নয়।’
গত তিন মাসে করোনায় প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে হারিয়েছে আমেরিকা। গড়ে দিনে মৃত্যু ১১০০–র বেশি। এই মৃত্যু দেশের মানবসম্পদের কতটা অপরিমেয় ক্ষতি, সেটা বোঝাতেই নজিরবিহীনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে এই সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠা। কীভাবে তুলে ধরা হয়েছে মৃতদের পরিচয়? কয়েকটি উদাহরণ। অ্যাঞ্জেলিন মিকালোপুলোস, ৯২, গাইতে বা নাচতে কখনও ভয় পাননি। লিলা ফেনউইক, ৮৭, হার্ভার্ড ল স্কুলের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আইনের স্নাতক। রোিম কোহন, ৯১, গেস্টাপোদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন ৫৬ জনকে। ফ্রাঙ্ক গ্যাবরিন, ইমার্জেন্সি রুমের চিকিৎসক, স্বামীর কোলেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলেন। স্কাইলার হারবার্ট, ৫, মিশিগানে করোনা ভাইরাসে সবচেযে কম বয়সের বলি। বাকি পিজ্জারেলি, ৯৪, স্যাডল রিভার, এন জে মাস্টার অফ জ্যাজ গিটার। এরকম এক হাজার নাম ও তাঁদের পরিচয়। পড়তে পড়তে মনে হবে, জীবনেরই একটি বিচিত্র মিছিল জেগে উঠেছে। যেন, পলকের জন্য স্থির হয়ে যাওয়া এক মহাতরঙ্গ।
সূত্র : আজকাল