অতি ক্ষুদ্র এক ভাইরাস। সাধারণ চোখে দেখা যায় না। অথচ তার কী অসম্ভব শক্তি। গোটা বিশ্বকে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের উত্পাতে অতিষ্ঠ। রোজ আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। রোজই মানুষ মারা যাচ্ছে। দুলাখেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। পরিস্থিতি ভয়াবহ। এর থেকে নিস্তার পাওয়ার পথ এখনও খুঁজে পায়নি মানবজাতি। গবেষকরা হাজার চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি। কবে থামবে এই মৃত্যুলীলা! উত্তর নেই। তবে বিশ্বজুড়ে এত হাহাকারের মাঝেও পাঁচটি দেশ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করার পথে। আর সেই পাঁচটি দেশ হলো— তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি ও অষ্ট্রেলিয়া।
তাইওয়ান : করোনার উত্সস্থল চিনের কাছাকাছি থাকা দেশ। জনসংখ্যা দু’কোটি ৪০ লাখ। এই দেশের সাড়ে আট লাখ মানুষ চীনের মূল ভূখণ্ডে কাজ করেন। ফলে তাইওয়ানের ঝুঁকি ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে গত দশ দিন ধরে সেখানে নতুন করে কারো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। জানুয়ারি মাস থেকে করোনা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ান। ট্রাভেল হিস্ট্রি রয়েছে এমন কেউ থাকলেই তার পরীক্ষা করা হয়েছে। তাইওয়ানে ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ৩৩৮ জন তার মধ্যে বিদেশফেরত। মারা গেছেন ছজন। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ২৮১ জন।
অস্ট্রেলিয়া : উত্তরাঞ্চল, শনিবার মাত্র আটজন এই দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাত্ আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড হারে কমতে শুরু করেছে। অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি রাজ্যে নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলেও নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। ৯০ শতাংশ আক্রান্ত ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে। ক্যাঙ্গারুর দেশে ৬ হাজার ৭১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৫ হাজার ৫৩৯ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছে। মারা গেছেন ৮৩ জন।
জার্মানি : এক লাখ ৫৬ হাজার ৫১৩ জন সেখানে করোনার আক্রান্ত। তার মধ্যে এক লাখ ৯ হাজার ৮০০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আরো ৪১ হাজার আক্রান্ত সুস্থ হওয়ার পথে। পাঁচ হাজার ৮৭৭ জন মারা গেছেন। মোট আক্রান্তের তুলনায় সেটা খুবই কম। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ ও উন্নত চিকিতসা ব্যবস্থা করোনা যুদ্ধ জিততে জার্মানিকে সাহায্য করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা : লকডাউন শিথিল করতে শুরু করেছে এই দেশের সরকার। চার হাজার ৩৬১ জন আক্রান্ত। মারা গিয়েছে্ন ৭৯ জন। এক হাজার ৪৭৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত এক মাস ধরে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে সেখানকার সরকার। তারই সুফল পাচ্ছে তারা।