হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের পর রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করত রিজেন্ট হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই ইচ্ছেমতো ‘নেগেটিভ-পজিটিভ’ ফল বসিয়ে রিপোর্ট দেয়া হতো রোগীদের। এছাড়াও সরকার থেকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা করে আদায় করত তারা। এভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়েছে এই হাসপাতাল।
সারোয়ার আলম আরো জানান, এ সব অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ নিজে করতেন অফিসে বসে। এই অপকর্মগুলো রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় থেকেই হতো বিধায়, এটিও সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি রোগীদের স্থানান্তর করে হাসপাতাল দুটিও সিলগালা করা হয়েছে।
এর আগে, সোমবার রাতেই মো. মোহাম্মদ শাহেদের মালিকানাধীন হাসপাতাল থেকে অননুমোদিত র্যাপিড টেস্টিং কিট ও একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। এ প্রসঙ্গে সারোয়ার আলম বলেন, ওই গাড়িতে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদফরের স্টিকার লাগানো ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনের চোখে ধুলো দিতেই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদফরের স্টিকার ব্যবহার করা হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সুজয় সরকার বলেন, ‘রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছিল, সেসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। হাসপাতালটির চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হবে। বিকেলের মধ্যে এ মামলার কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
এর আগে সোমবার বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এতে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। অভিযানে রিজেন্টের ৮ জন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।