সেরা মহিলা বিজ্ঞানীর খেতাব পাওয়া গীতা রামজি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অথচ জীবাণু নিয়েই ওঠাবাস, কাজকর্ম ছিলো তার। আর সেই জীবাণুর ছোবলেই প্রাণ গেলো ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইরোলজিস্টকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন ৬৪ বছরের বিজ্ঞানী গীতা রামজি। এই নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নোভেল করোনা ভাইরাস প্রাণ কাড়ল ৫ জনের।
প্রতিষেধক আবিষ্কার এবং এইচআইভি নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা কাজ ছিল গীতা রামজির। দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের সাথে যুক্ত ছিলেন। এক সপ্তাহ আগেই লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। কোনো অসুস্থতা ছিল না, করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গও দেখা যায়নি। তা সত্ত্বেও আচমকা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট আসে। চিকিৎসার বিশেষ সুযোগ দেননি। আর তাই নিয়েই আক্ষেপ করছেন দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট গ্লেনডা গ্রে। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘অধ্যাপক গীতা রামজি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ (বুধবার) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
আফ্রিকান মহিলাদের এইচআইভি সমস্যা মেটাতে ভিন্ন পথে গবেষণার কাজ করে বিশ্বের চিকিৎসা মহলে এক নজির তৈরি করেছিলেন গীতা রামজি। গোটা গবেষণা কাজের অধিকাংশ টাই তিনি কাটিয়েছেন এইচআইভি-এইডস নিয়ে। ২০১৮ সালে তার এই নজিরবিহীন কাজের জন্য ইউরোপিয়ান ডেভেলপমেন্ট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালসে সেরা মহিলা বিজ্ঞানী হিসেবে পুরস্কার পান। পুরস্কার হাতে নিয়ে সেসময় তিনি বলেছিলেন, ‘এইচআইভি-এইডস গোটা বিশ্বে যে মহামারির আকার নিচ্ছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। এই কাজ করতেই আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম।’
প্রবীণ রামজি নামে ভারতীয় বংশোদ্ভুত দক্ষিণ আফ্রিকার এক ফার্মাসিস্টকে বিয়ে করেছিলেন গীতা পরিবার বলতে এইই। কীভাবে গীতা রামজির দাফন সম্পন্ন হবে, তা এখনও জানা যায়নি। যেহেতু করোনায় মৃত্যু হলে, দাফন একেবারে হু’র গাইডলাইন মেনে করতে হয়, তাই এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন গ্লেনডা গ্রে। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেখানেও ২১ দিনের লকডাউন চলছে। তবে অনেকেই এখনও লকডাউন সেভাবে মেনে চলছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাউথ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল।