দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৭০ জন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) শনিবার তথ্য অনুযায়ী দেশে ২৪ ঘন্টায় মোট আক্রান্ত ৬৩৬ জন। আজ মারা গেছে নতুন ৮ জন।
মোট পাঁচ হাজার ৪৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্তের এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২১৪ জন। নতুন করে ৩১৩ জন সুস্থ হওয়েছেন। মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন দুই হাজার ৪১৪ জন।
কোভিড-১৯’এ মৃত রোগীর তালিকায় পুরুষের সংখ্যা ৭৩ শতাংশ আর নারী মৃত্যুর হার ২৭ শতাংশ।
এদিকে রাজধানী ঢাকার সাথে এবার করোনার প্রকোপ বেড়েছে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগেও।
এছাড়া সব জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা উর্ধ্বমুখী। আর করোনা সংক্রমণে লোকাল ট্রান্সমিশন পর্যায় চলছে ঢাকা সিটিতে। শুধু ঢাকায় সিটিতে আক্রান্ত ৫৮ দশমিক ২৮ শতাংশ আর সম্পূর্ণ ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ৮৪ শতাংশ।
এদিকে মৃত্যুর সংখ্যাতে এগিয়ে আছে ঢাকা সিটি। আইইডিসিআর প্রকাশিত মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বর্তমানে ৬৪টি। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় করোনা তার ছাপ ফেলেছে।
আইইডিসিআর’এ শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ জেলা ভিত্তিক তথ্য অনুসারে, শুধু ঢাকা বিভাগেই সর্বমোট আক্রান্ত আট হাজার ৬৬৭ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকা সিটিতে ছয় হাজার ১৬২, নারায়ণগঞ্জে এক হাজার ১৩৬, গাজীপুরে ৩৩০, কিশোরগঞ্জে ২০২, মাদারীপুরে ৫৪, মানিকগঞ্জে ২৮, মুন্সীগঞ্জে ২১০, নরসিংদীতে ১৭১, রাজবাড়ীতে ২৩, ফরিদপুরে ২১, টাঙ্গাইলে ৩১, শরীয়তপুরে ৫৭, গোপালগঞ্জে ৪৯, ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ২০৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৫৭৬ জন। বিভাগটিতে আক্রান্তের হার পাচ দশমিক ৪৫ শতাংশ। চট্রগ্রাম বিভাগে করোনার হটস্পট চিহ্নিত হয়েছে কুমিল্লা জেলা। সেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত। কুমিল্লায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৫০ জন। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলায় ১৫৯, কক্সবাজারে ৭২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭, লক্ষ্মীপুরে ৫০, বান্দরবান ৪, খাগড়াছড়িতে ২, নোয়াখালীতে ২৭, ফেনীতে ৮, চাঁদপুরে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
তবে ভয়াবহ চিত্র দেখা যাচ্ছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে। একদিনে আক্রান্ত ২৯ জন বেড়ে দাড়িয়েছে ৪০০ জনে। ময়মনসিংহ জেলায় ২০৪, জামালপুরে ১০২, নেত্রকোনায় ৬৪, শেরপুরে ৩০ জন আক্রান্ত।
রংপুরের গাইবান্ধায় ২৪, নীলফামারীতে ৩৫, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ৩৩, দিনাজপুরে ৩৬, ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩, রংপুর জেলায় ৮৯, পঞ্চগড়ে ১০ জনসহ মোট ২৬৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়াও খুলনায় ২০, ঝিনাইদহে ৩৪, যশোরে ৭৯, চুয়াডাঙ্গায় ২৩, বাগেরহাটে ২, মাগুরা ১১, মেহেরপুর ৫, কুষ্টিয়া ২০, সাতক্ষীরা ৪ ও নড়াইলে ১৩ জনসহ মোট ২১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে।
তবে কার্যত লকডাউনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বরিশাল বিভাগে। তবে পিরোজপুরে আক্রান্ত ১০ জন বর্তমানে করোনা মুক্ত হয়ে সুস্থ আছেন। এছাড়াও গত তিনদিনে বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা স্থির অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল জেলায় ৪৮, বরগুনায় ৩৪, পটুয়াখালীতে ২৮, ভোলাতে ৭, ঝালকাঠিতে ১৩, জনসহ মোট ১৩০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
সিলেটের মৌলভীবাজারে ৩০, সুনামগঞ্জে ৩৫, হবিগঞ্জে ৭০, সিলেট জেলায় ২৮ জনসহ মোট ১৬৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী জেলায় ২৬, জয়পুরহাটে ৩৯, বগুড়ায় ১৮, নওগায় ২৪, সিরাজগঞ্জে ৬, নাটোর ১২, চাপাইনবাবগঞ্জে ১২ ও পাবনায় ১৬ জনসহ মোট ১৫৩ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বের সাথে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের জীবন যাত্রার চিত্র। দেশে বর্তমানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে প্রায় ৩৯৫টি উপজেলা, ৪৯টি জেলা ও ৩টি বিভাগ।
সূত্র : আইইডিসিআর