’আমি ইসক্যা চালাই খাই, এ্যাহন ইসক্যা চালানি বদ্দ (বন্ধ)। আমার ঘরে খাউয়ে ছয়জন। দিনে এক বেলার খাউন জোগাড় করবার পাইতাছি না, এ্যামনে আর কয় দিন গেলে, করোনায় নয়, পরিবার নিয়া আমি না খাইয়া মরমু’।
শনিবার দুপুরে জামালপুর শহরের কাচারী পাড়া এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক বাবর আলী বাবু কান্না জড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেছেন।
এদিকে জামালপুর পৌরসভার কাচারী পাড়া খালেকের দোকান মোড় এবং নাট্যকার এসএম হুদা সড়ক এলাকায় একই দিন দুপুরে নিম্ন আয়ের শতাধিক মানুষ খাদ্য সহায়তার জন্য বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় সরকারি ত্রাণ বিতরণে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন দাবি করেছেন তারা।
স্ব-স্ব বাড়ির সামনে ও রাস্তায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ঘণ্টাব্যাপী দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা এবং তাদের হাতে ছিল, ত্রাণ চাই-বাঁচতে চাই, কেউ খাবে কেউ খাবে না- স্বাধীন দেশে তা হবে না, সরকারী ত্রাণ চুরি হয় কেন- প্রশাসনের কাছে জবাব চাই, গরীবের জন্য সাহায্য দিবে সরকার-খাবে শুধু মেম্বার- তা হবে না- তা হবে না, দেশে করোনাভাইরাসের সাথে সাথে সমানভাবে বাড়ছে চাল চোর, আমাদেরকে দেখার মত কেউ নেই, সরকারি ত্রাণ বিতরণে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ চাই-সহ বিভিন্ন প্লেকার্ড ।
এ সময় জোসনা, গাজী, মন্টু, হনুফা বেগম, রুস্তম, জাহানারাসহ একাধিক ব্যক্তি কান্না জড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করেন, আমরা এই এলাকার একজনও সরকারীভাবে কোনো অনুদান পাইনি। কাজ করতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে- অর্ধহারে আছি। আমাদের ধারণা, এভাবে আর কয়দিন চলতে থাকলে করোনাভাইরাসে নয় বরং না খেয়েই আমরা মারা যাব।
চা বিক্রেতা রুস্তম ও বাবুল বলেন, ’অনেক দিন হলো চা-পান ব্যাচবার পাইতাছি না, দোকান বদ্দ (বন্ধ)। পরিবার-পরিজন নিয়া অনেক সময় না খাইয়া থাহি।’
খিচুরী বিক্রেতা আব্দুল খালেক বলেন, দোকান বদ্দ (বন্ধ)। হাতে যা ট্যাহা আছিল তাও শেষে। ঘরে খাবার নাই, এখন কী খামু, কীব্যাই চলমু। চিন্তায় ঘুম আহে না ।
অন্যদিকে ওই এলাকার কাচারীপাড়া মসজিদ কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সাংবাদিকদের জানান, কয়েক দিন আগে কাচারীপাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্মহীন তিন শ’ জনকে খাদ্য সহায়তা দেয়। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সীমিত। এছাড়াও কাচারীপাড়া যুবসমাজকে নিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে।