মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সেইসাথে করোনাদুর্যোগে নিরন্ন গরিব মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আজ রোববার দুপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা: এমএ সেলিম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা: পারভেজ রেজা কাকন, ডা: খালেকুজ্জামান দীপু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ডা: রাকিবুল ইসলাম আকাশ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এরআগে গত ১০ এপ্রিল রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে পিপিই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন রিজভী। ইতিমধ্যে সারাদেশে সকল বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক এবং অন্যদের জন্য পিপিই বিতরণ প্রায় শেষ করেছে জেডআরএফ ও ড্যাব।
রুহুল কবির রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, আজকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের উচিত ছিল সমন্বিতভাবে জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিন্তু জাতীয় উদ্যোগ নেয়া তো দূরে থাক বিএনপি বা এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল যেখানেই সাধ্যমত সাধারণ গরিব মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে যাচ্ছে সেখানেই পুলিশকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বাড্ডায় এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বিএনপি শত জুলুম-নির্যাতনের মাঝেও সাধারণ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে। যতদিন মহামারীর প্রাদুর্ভাব থাকবে ততদিন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ জনগণের পাশে দাঁড়ানো অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আজকে ভিক্ষুক রাস্তায় রাস্তায় খাবার খুঁজছে। চট্টগ্রামে ত্রাণের ট্রাক লুট করা হয়েছে। এই মহামারীর মধ্যে সরকারের লোকজন ত্রাণের চাল চুরি করছে। চারদিকে চাল চুরির হিড়িক পড়েছে। আসলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। দেশে দায়িত্বশীল সরকার নেই। আজকে গোটা দেশে বিপর্যয়ের মুখেও আওয়ামী লীগের লুটপাট থামছে না। এজন্য আমরা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছি।
রিজভী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা করার জন্য ডাক্তারদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। এখন ডাক্তাররাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের কোনো সুরক্ষা নেই। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই দিতে পারছে না। যখন থেকে করোনার সংক্রমণ দেখা গেছে তখন থেকেই সরকার প্রস্তুতি নিলে এই সমস্যা হতো না। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানিয়েছিলাম, সেটিও করছে না সরকার। আজকে অনেক বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছে। কত কষ্টের মাঝেও তারা চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে।
রিজভী বলেন, ত্রাণ বিতরণের জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন তালিকা করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দিবে। এরপর সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হবে। আসলে এধরনের কাজ হলে শুধু আওয়ামী লীগের লোকজনই ত্রাণ পাবে। ফলে আরো বেশি বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। এজন্য আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে তালিকা বাতিল করে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করতে হবে।