বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠাতে কুয়েত সরকারের এক আমলাসহ তিন জনকে ২১ লাখ দিনার (কুয়েতি মুদ্রা) ঘুষ দিয়েছিলেন দেশটিতে আটক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে তিনি ঘুষ গ্রহণকারীদের নাম প্রকাশ করেছেন। সোমবার কুয়েতের ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমস তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতারণার অভিযোগে ১২ বাংলাদেশি অভিযোগ করার পর কাজী শহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর পাবলিক প্রসিকিউশন তাকে ও আরও এক বাংলাদেশিকে মানব পাচারের অভিযোগে আরও কিছুদিন আটক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে কাজী শহিদ জানিয়েছেন, ঘুষ গ্রহণকারীদের একজন কুয়েতের একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত, অন্যজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আমলা এবং তৃতীয়জন দেশটির এক নাগরিক। এদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুয়েতে কাজী শহিদের মালিকানাধীন ক্লিনিং কোম্পানিতে গিয়েছিলেন। তিনি বৈঠকের আগে কাজী শহিদকে প্রতিষ্ঠানের কুয়েতি কর্মীদের ছুটিতে পাঠাতে বলেছিলেন। কারণ, স্থানীয়রা তাকে চিনে ফেলুক ওই কর্মকর্তা তা চাননি। মূলত ঘুষ নেওয়ার সময় কেউ যাতে সাক্ষী হিসেবে না থাকে সেজন্যই তিনি চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। তাই ওই কর্মকর্তার অনুরোধে বৈঠকের আগেই কাজী শহিদ স্থানীয় কর্মীদের ছুটি দিয়ে দেন।
কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে ১০ লাখ দিনারের চেক এবং এক লাখ দিনার নগদ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন কাজী শহিদ। চেকের একটি কপি পাবলিক প্রসিকিউশনকে দেওয়া হয়েছে। তার হয়ে ওই কর্মকর্তাই ঘুষের সব লেনদেন সম্পন্ন করেছিলেন।
তদন্ত সূত্র আরও জানিয়েছে, বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিকে কুয়েতে আনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার শর্তে স্থানীয় এক নাগরিককে ১০ লাখ দিনার ঘুষ দিয়েছিলেন কাজী শহিদ।
আরব টাইমস জানিয়েছে,মামলার প্রত্যক্ষদর্শী ১২ জন বাংলাদেশি রোববার কুয়েত থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। বাকী এক জন কাজী শহিদের কোম্পানির কাছ থেকে বকেয়া পাওনা পাওয়ার পর পালিয়ে গেছে। তার জন্য বাংলাদেশে ফেরার উড়োজাহাজের টিকিট বুকিং দেওয়া হলেও তিনি বিমানবন্দরে আসেননি।