কাগজ ডেস্ক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে গতকাল মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এসব সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে দুজন, ঢাকা ও রংপুরে একজন করে নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী, একজন পথচারী এবং বাকি একজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
চট্টগ্রাম : মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহরসহ আশেপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করে তারা। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। নিহতরা হলেন, ওয়াসিম ও ফারুক। এর মধ্যে ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষার্থী। তিনি কক্সবাজারের পেকুয়া এলাকার বাসিন্দা। পথচারীর ফারুকের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন।
ঢাকা : রাজধানীর ঢাকা কলেজের বিপরীত পাশে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অজ্ঞাতনামা এক যুবক (২৫) নিহত হয়েছেন। বিকেলে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন এক পথচারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার কানের নিচে ও মুখের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই পথচারী তার নাম পরিচয় বলতে পারেননি।
রংপুর : দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হন। আবু সাইদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাইদ নিহত হন। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ চার জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ##