প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মানুষের জীবন ও জীবিকারক্ষা, অর্থনৈতিক প্রণোদনাসহ দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে সরকারি সহায়তার আওতায় এনে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা আজ সমগ্র বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত বলে জানিয়েছেন তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
একই সময় তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস এমনকি দি ইকনোমিস্ট প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছে বলে জানিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ’তে ডিজইনফেকশন চেম্বার উদ্বোধনকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনা মহামারীর মধ্যে সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন’। সবকিছু লকডাউন হলেও গণমাধ্যম খোলা থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এপর্যন্ত দেশে প্রায় ৬০ জন গণমাধ্যমকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আমি আমার প্রিয় বন্ধুপ্রতিম সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকনকে হারিয়েছি।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার সদ্যপ্রয়াত নগর সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খোকন স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এসময় প্রয়াত খোকনের আত্মার শান্তি ও করোনা-আক্রান্তদের দ্রুত সুস্থতা প্রার্থনা করেন মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রতি গভীর মমতার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি সবসময় মন্ত্রী ছিলাম না বা থাকবো না, কিন্তু আমি সবসময় সাংবাদিকদের সাথে ছিলাম। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আমি সকল সাংবাদিকের করোনাপরীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ করেছি, তারা সে ব্যবস্থা করেছে। বিশেষ বুথের জন্যও আমি তাদের তাগাদা দেবো।
‘সেইসাথে দুঃস্থ সাংবাদিকদের জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব কিছু করার চেষ্টা করছি, শিগগিরই কিছু করতে পারবো বলে আশা করি’, জানান তথ্যমন্ত্রী।
ড. হাছান আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিশ্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে মেডিকেল গবেষণায় যে অর্থব্যয় হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হয় সামরিকখাতে। কিন্তু সমগ্র বিশ্ব আজ এক অদৃশ্য শত্রুর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত, যেখানে শুধু মাস্ক, স্যানিটাইজার আর জীবাণুনাশক নিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে। আমার প্রশ্ন, এখনো কি আমরা অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় থাকবো, না কি সম্মিলিতভাবে মানব সমাজের জন্য কাজ করবো?’
আর অস্ত্রের প্রতিযোগিতা নয়, সবাই মিলে মানুষের জন্য কাজ করাই হোক পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের ব্রত, আশা প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী এসময় করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক রূপ তুলে ধরে বলেন, এটি কোনো জাতীয় দুর্যোগ নয়, এটি বৈশ্বিক মহামারী। এসময় মানুষ যেন হতাশাগ্রস্ত হয়ে না পড়ে, সেজন্য আপনারা আশাব্যঞ্জক সংবাদ পরিবেশন করুন।
তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী অনুষ্ঠানে ডিআরইউ নেতৃবৃন্দের কাছে এন্টিসেপটিক সাবান ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার হস্তান্তর করেন। এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সুজিত রায় বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে যখন যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই ত্রাণ ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ডিজইনফেকশন চেম্বার প্রদানকারী সংগঠন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট অব বাংলাদেশ-এনআইবি’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও ডিআরইউ সহসভাপতি নজরুল কবীর।