কাগজ প্রতিবেদক, গৌরীপুর
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বিপ্লব হাসানের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম।
মঙ্গলবার দুপুরে বিপ্লব হাসানের কবর জিয়ারত করে তার পরিবারের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন তিনি। এ সময় বিপ্লবের স্কুল পড়ুয়া দুই বোনের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
বিপ্লব হাসান উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চুড়ালি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। গত ২০ জুলাই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের কলতাপাড়া বাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বিপ্লব হাসান।
বিপ্লব হাসান ডৌহখলা ইউনিয়নের মোজাফর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বিপ্লব সবার বড়। দুই বোনের মধ্যে ফারজানা আক্তার বাবলী গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি ও জান্নাতুল ফেরদৌস কলতাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
বিপ্লবের বাবা বাবুল মিয়া ওয়ার্কশপ চালাতেন। কয়েক বছর আগে তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনার খরচ যোগানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সংসারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষাণী মিলে চাকরি নেন বিপ্লব। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঘিরে সহিংসতায় বিপ্লব নিহত পর তাঁর পরিবারটি অভাব-অনপনে পড়ে যায়।
ইউপি চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ুম বলেন, বিপ্লবের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। তার বাবা অসুস্থ মানুষ। সংসারের হাল ধরতে সে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি মিলে চাকির করতো। তার মৃত্যুতে পরিবারটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। দুই বোনের পড়াশোনার বন্ধের উপক্রম হয়। আমি দুই বোনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছি। পাশাপাশি প্রশাসন ও হৃদয়বানদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
বিপ্লবের মা বিলকিস আক্তার বলেন, বিপ্লব ছিল আমার একমাত্র ছেলে। আমার পরিবারেও একমাত্র আয়ের উৎস্য। আমি ছেলের হত্যার বিচার চাই। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব দুই মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এটা স্বস্তির বিষয়। তবে সংসারটা আমি চালাবো কিভাবে এই চিন্তায় আছি।
গত শনিবার (২০ জুলাই/২০২৪) উপজেলার কলতাপাড়া বাজারে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করে ৩জন। তাদের মধ্যে একজন হলেন বিপ্লব হাসান। অপর দু’জন হলেন মইলাকান্দা ইউনিয়নের পূর্বকাউরাট গ্রামের জোবায়ের আহম্মেদ ও রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের নুরে আলম সিদ্দিকী রাকিব।