টাঙ্গাইলের সখীপুরের জঙ্গলে ফেলে যাওয়া নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তিনি প্রাণঘাতি করোনায় আক্রান্ত নন। ঢাকায় নমুনা পরীক্ষার পর বুধবার সন্ধ্যায় জানা গেল তার রিপোর্ট নেগেটিভ। অসহায় এই নারীর নাম সাজেদা (৫০)। বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায়।
করোনা সন্দেহে তারই সন্তানেরা সোমবার সখীপুর উপজেলার ইছামতি গ্রামের একটি জঙ্গলে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। সোমবার রাতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস সোবহান নয়া দিগন্তকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় ওই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নমুনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ডা. মো. আব্দুস সোবহান বলেন, একটি মেডিক্যাল টিম নিয়ে সোমবার রাত ২টা নাগাদ জঙ্গল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করি এবং রাতেই ব্যক্তিগত খরচে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করি। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উদ্ধারের সময় তাকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। এছাড়া জ্বর, সর্দি ও গলা ব্যাথাও ছিল।
উল্লেখ্য, ওই নারীর বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায়। এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে গাজীপুরের সালনায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সন্তানেরা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। আর সবার জন্য রান্না করার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। কয়েকদিন ধরে তার জ্বর, সর্দি, কাশি শুরু হলে আশেপাশের বাসার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেন। ওই অবস্থায় সোমবার মাকে সাথে নিয়ে একটি পিকআপভ্যান ভাড়া করে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন সন্তানেরা। পথিমধ্যে সখীপুর জঙ্গলে মাকে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।