মহামারি করোনাভাইসের বিস্তার রোধে টাঙ্গাইল জেলাকে ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। এ ‘লকডাউন’ চলবে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত। এর ফলে অন্য জেলা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল টাঙ্গাইল। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিন বিকেল ৪টা থেকে এটি কার্যকর হয়েছে।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে টাঙ্গাইল জেলাকে চারদিক থেকে লকডাউন করে দিচ্ছি। অন্য জেলার সাথে টাঙ্গাইল জেলার সংযোগ সড়কে ব্লকসহ চেকপোস্ট বসানো হবে। শুধু রোগী, অ্যাম্বুলেন্স এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কোনো লোক ও কোনো গাড়ি যাওয়া-আসা করতে পারবে না। এতে করে অন্য জেলার সাথে আমাদের জেলা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এই জেলা উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার প্রবেশদ্বার হওয়ায় হাইওয়ে রোড বন্ধ হবে না। হাইওয়ে থেকে জেলায় ঢুকার রাস্তা বন্ধ থাকবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রোডগুলোও বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে লোকজন চলাচল করতে না পারে। বিকেল ৫টার মধ্যে সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ইতিমধ্যে পাশ্ববর্তী গাজীপুর ও জামালপুর জেলা আক্রান্ত হয়েছে। আমরা মাঝখানে পড়েছি। সেজন্য আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি। সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখা এবং লকডাউন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের সাথে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। সাধারণ জনগণ যাতে একেবারে ঘর থেকে বের হতে না পারে এজন্য তারা কাজ করবে।
মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজে এই জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, সদর আসনের এমপি মো. ছানোয়ার হোসেন, লে. কর্ণেল মোহাম্মদ সোহেল রানা, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াহীদুজ্জামান, পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরনসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শহরে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ওষুধ, খাদ্যপণ্যবাহী যানবাহন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও সংবাদকর্মীরা এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। সভা শেষে সেনা সদস্যদের সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম শহরের ব্যস্ততম পার্কবাজার পরিদর্শন করেন।
এছাড়া টাঙ্গাইল পৌরসভা, টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স, শহর আওয়ামী লীগ ও জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে শহরে ঝটিকা অভিযান চালানো হয়। এ সময় অকারণে ঘরের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের লাঠিপেটাসহ তাদের কান ধরে উঠবস করানো হয়।