কাগজ প্রতিবেদক, ফুলপুর
ঢাকার হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ৪ আগস্ট মিছিল করতে গিয়ে নিখোঁজ হন ফুলপুরের আনারুল ইসলাম (৩০)। তিনি উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের ঘোমগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নিখোঁজের ১০ দিন পর ১৪ আগস্ট তার লাশের সন্ধান পান পরিবার। লাশ বাড়ি আনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা-বাবা শোকে স্তব্ধ হয়ে আছেন।
নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম জানান, আনারুল ইসলামকে নিয়ে ঢাকার হাউজ বিল্ডিং এলাকার ৮নং রোডের ফুটপাতে সবজির ব্যবসা করতাম। কাছেই একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতাম। পিতাপুত্র একত্রে দোকান চালাতাম। মাঝে মধ্যে আনারুল ভাড়ায় অটোরিকশাও চালাত। এভাবেই চলছিল সংসার।
৪ আগস্ট আনারুল হাসিনা সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছিলাম। ১৩ আগস্ট রাতে ফুলপুর থানা পুলিশের মাধ্যমে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পাই। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে লাশের সন্ধান পেয়েছি।
পরে জানতে পারি হাউজ বিল্ডিং ৬নং রোডে মিছিল করার সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিল। লোকজন কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ প্রেরণ করে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত হলে আমাদের জানানো হয়। আনারুল ইসলামের মাথায় দুটি গুলিবিদ্ধের ক্ষত ছিল। ছোট তিন মেয়ে এক ছেলের সংসার। ছেলের মৃত্যুতে সংসার চালাতে সাহায্যের হাত শেষ হয়ে গেছে।
আমার বৃদ্ধ বয়সে ভবিষ্যৎ চলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দেড় বছর আগে এক এতিম মেয়েকে বিয়ে করিয়েছিলাম। সেও আজ বিধবা হয়ে গেছে। অবৈধ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে শত শত ছাত্র জনতার মৃত্যু হয়েছে। খুনি সরকারের পতন হওয়ায় ছেলের মৃত্যুতে কোনো কষ্ট নেই।
সরকারের কাছে আন্দোলনে নিহতদের শহিদের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মা আনোয়ারা বেগম জানান, শত কিছু করেও ছেলেকে ফিরে পাওয়া যাবে না। দেশের জন্য ছেলে জীবন দিছে। আমরা তার মর্যাদা চাই।