করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল। গোটা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গেল ৮৮ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখলো আমেরিকা এবং যুক্তরাজ্য। নিউ ইয়র্কে করোনার কারণে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হলো। সব মিলিয়ে বুধবার দিনভর আরো এক ভয়াবহতার চিত্র দেখলো পৃথিবী। একই সঙ্গে দেখলো ট্রাম্প এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথার লড়াই।
মঙ্গলবারের পরে বুধবারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে একহাত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দিন ফের তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। বুধবারই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। বলেছিলেন, ”ট্রাম্প এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি বন্ধ করুন। নইলে আরো বেশি মৃতদেহ দেখতে হবে তাকে।”
জবাবে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ”বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সব চেয়ে বেশি অর্থ সাহায্য করে অ্যামেরিকা। কিন্তু তার প্রতিদান তারা দিতে পারেনি।” ট্রাম্পের অভিযোগ, ”চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনেক কম অর্থ সাহায্য করে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা চীন নিয়ে মেতে আছে।” জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের বক্তব্য, ”যেহেতু চীনেই প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তাই ভাইরাসের উৎস খুঁজতে চীনে লাগাতার কাজ চালাচ্ছে তাদের সংস্থা। এটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।”
এপ্রিলের গোড়া থেকেই মার্কিন বিশ্বে করোনার ভয়াবহতা লাফিয়ে বাড়ছিল। নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির পরিস্থিতি সব চেয়ে ভয়াবহ। আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশও। নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের একটি বড় অংশের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। তারই মধ্যে বুধবার সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখলো অ্যামেরিকা। এক দিনে মৃত্যু হল এক হাজার ৮৫০ জনের। যার জেরে অ্যামেরিকায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৭৯৫। ছাড়িয়ে গেল স্পেনকেও। এখনও পর্যন্ত ইটালিতে সব চেয়ে বেশি করোনা মৃত্যু ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজার ৬৬৯ জনের। স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা সামান্য হলেও কমেছে। সে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯২ জনের।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আমেরিকায় মৃতের সংখ্যার চেয়েও বেশি উদ্বেগের কারণ আক্রান্তের সংখ্যা। মার্কিন সময়ে বুধবার রাত পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৩৫ হাজার জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মাত্র ১৫ হাজার। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অ্যামেরিকায় সুস্থ হওয়ার হার কম। তারা তুলনা টানছেন ইটালি এবং স্পেনের। ইতালিতে মোট আক্রান্ত এখন পর্যন্ত এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার। স্পেনে মোট আক্রান্ত প্রায় দেড় লাখ। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু আমেরিকায় সেই তুলনায় সুস্থ হওয়ার প্রবণতা অনেক কম। এটাই চিন্তা এবং আশঙ্কার কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।