দেশে এখন আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই পেছনে ফেলেছে আগের দিনের সংখ্যাকে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) সোমবারের তথ্য অনুযায়ী দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের ও আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮৮ জন। আগের দিনের চেয়ে ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি অর্থাৎ মোট ৬ হাজার ২০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্তের এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ফলে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৮২ জনের, মোট আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ১৮৩ জন। নতুন করে ১৪৭ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ১ হাজার ২০৯ জন জন। সব মিলিয়ে দেশে মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৬৯৬ জনের নমুনা।
কোভিড-১৯’এ মৃত রোগীর তালিকায় পুরুষের সংখ্যা ৭৩ শতাংশ আর নারী মৃত্যুর হার ২৭ শতাংশ। তবে আজকে মৃত পাঁচ জনই পুরুষ।
এদিকে সামগ্রিকভাবে এই মরণঘাতি ভাইরাসে ভয়াবহ প্রকোপে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। জনবহুল ও নমুনা সংগ্রহ সহজ লভ্য হওয়ায় শুধু ঢাকায় সিটিতে আক্রান্ত ৫৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ আর সম্পূর্ণ ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ৮৩ শতাংশ। মৃত্যুর সংখ্যাতেও এগিয়ে আছে ঢাকা সিটি। ঢাকা সিটিতে এখন পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৯৮ জন। আইইডিসিআর প্রকাশিত মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বর্তমানে ৬৩টি। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় করোনা তার ছাপ ফেলেছে।
প্রায় সকল বিভাগেই আক্রান্ত বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
শুধু ঢাকা বিভাগেই সর্বমোট আক্রান্ত ছয় হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকা সিটিতে চার হাজার ৭৮০, নারায়ণগঞ্জে এক হাজার ২১, গাজীপুরে ৩২৫, কিশোরগঞ্জে ২০২, মাদারীপুরে ৪৮, মানিকগঞ্জে ২২, মুন্সীগঞ্জে ১২৭, নরসিংদীতে ১৫৪, রাজবাড়ীতে ১৯, ফরিদপুরে ১৪, টাঙ্গাইলে ৩০, শরীয়তপুরে ৪০, গোপালগঞ্জে ৪৭, ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ১১৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৬৯ জন। বিভাগটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে চার দশমিক ৪৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম জেলায় ৮২, কক্সবাজারে ৩৭, কুমিল্লায় ১০৫,
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৫, লক্ষ্মীপুরে ৪৩, বান্দরবান ৭, খাগড়াছড়িতে ২, নোয়াখালীতে ১৭, ফেনীতে ৬, চাদপুরে ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। চট্রগ্রাম বিভাগে মারা গেছে সর্বমোট ১০ জন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে জামালপুরে ৭৩, নেত্রকোনায় ৫১, শেরপুরে ২৬, ময়মনসিংহ জেলায় ১৬৬ জনসহ মোট ৩১৬ জন আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহে মারা গেছে মোট ছয় জন।
এছাড়াও খুলনায় ১৬, ঝিনাইদহে ১৯, যশোরে ৬৩, চুয়াডাঙ্গায় ৯, বাগেরহাটে ২, মাগুরা ৮, মেহেরপুর ২, কুষ্টিয়া ১৬, সাতক্ষীরা ২ ও নড়াইলে ১৩ জনসহ মোট ১৫০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে। খুলনা বিভাগে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
রংপুরের গাইবান্ধায় ২৫, নীলফামারীতে ১৮, লালমনিরহাটে ৩, কুড়িগ্রামে ১৯, দিনাজপুরে ২১, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৭, রংপুর জেলায় ৬১, পঞ্চগড়ে ৮ জনসহ মোট ১৭২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন একজন।
আর বরিশাল বিভাগে জেলায় ৪১, বরগুনায় ৩৬, পটুয়াখালীতে ২৮, পিরোজপুরে ১০, ভোলাতে ৫, ঝালকাঠিতে ১০ জনসহ মোট ১৩০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
সিলেটের মৌলভিবাজারে ১৯, সুনামগঞ্জে ৩৩, হবিগঞ্জে ৬৯, সিলেট জেলায় ১৮ জনসহ মোট ১৩৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সিলেটে এখন পর্যন্ত পাচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী জেলায় ২১, জয়পুরহাটে ৩৩, বগুড়ায় ১৯, নওগায় ১৬, সিরাজগঞ্জে ৪, নাটোর ৯, চাপাইনবাবগঞ্জে ২ ও পাবনায় ১১ জনসহ মোট ১১৫ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে মোট মৃত্যু চারজন।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বের সাথে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের জীবন যাত্রার চিত্র। এদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে বেড়েছে লকডাউন স্থানের সংখ্যা। দেশে বর্তমানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে প্রায় ৩৯৫টি উপজেলা, ৪৯টি জেলা ও ৩টি বিভাগ।
সূত্র : আইইডিসিআর