নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পোয়ালশুড়া কান্দিপাড়া গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় গৃহবধূর লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৬ জুন) ভোরে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্বার করেছেন গুরুদাসপুর থানা পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পোয়ালশুড়া কান্দিপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম জানান, গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের ফারুক ফকিরের মেয়ে শারমিন আক্তার (২২) এর সঙ্গে একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পোয়ালশুড়া কান্দিপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে সোহাগ (২৭) সঙ্গে ১ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে স্বামীর সংসারে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। শাশুড়ির সঙ্গে মাঝে মধ্যেই যৌতুক নিয়ে শারমিনের কথা কাটাকাটি হতো। প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য তার শাশুড়ি তাকে চাপ প্রয়োগ করতেন।
বৃহস্পতিবার সকালে শাশুড়ি আবারও গালিগালাজ করলে তিনি চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চিরকুটে শারমিন লিখেন, ‘আমার বাবা তিন লাখ টাকা দেওয়ার পরেও আমার শাশুড়ি আমাকে জ্বালায়। তার মন ভরে নাই। আপনেরা সবাই দেখেন তার বিটাক (ছেলে) কত কোটি টাকা দিয়ে বিয়ে দেয়।’
মেয়ের বাবা ফারুক ফকির অভিযোগ করে বলেন, ‘বিয়েতে ৫ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রথমেই মেয়ে জামাইকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই লাখ টাকা অচিরেই দেওয়ার কথা রয়েছে। তার পরেও মেয়েকে জামাই, শ্বশুর, শাশুরি মিলে প্রায়ই যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এসব করে আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
মেয়ের মা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যার নাটক করছেন। আমার মেয়েকে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিযার্তন করে হত্যা করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্বার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এসময় নিহতের হাতের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচণার বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। যার কারণে অভিযুক্ত সাগর, তার মা এবং বাবাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।