1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. editor@amadergouripur.com : Al Imran :
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
গৌরীপুরে কৃষক হত্যার ঘটনায় মামলা গৌরীপুরে ১৮শ পিস ইয়াবাসহ জামাই-শ্বশুর গ্রেফতার গৌরীপুরে শতবর্ষী মসজিদের নতুন অসমাপ্ত ভবনের উদ্বোধন গৌরীপুরে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক পরিষদের উদ্যোগে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ইসরাইলি পণ্য বর্জনের স্লোগান দিয়ে দোকানে দোকানে লুট, গাড়ি ভাঙচুর গৌরীপুর আন্তঃব্যাচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের লটারি গৌরীপুরে আকিজের সেলসম্যানের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন ও টাকা ছিনতাই, প্রতিবাদে মানববন্ধন গৌরীপুর মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক পরিষদ’র আহ্বায়ক সুমন, সদস্য সচিব মোখলেছুর গৌরীপুরে চার বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেফতার এ বছর ফিতরার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ

নিউ ইয়র্কে কমেনি মৃত্যুর মিছিল : সুস্থতার হার বেড়েছে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০
  • ৩৩১ Time View

করোনার ক্রমাবনতির পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর এন্ড্রো কোমো নিউ ইয়র্কে লকডাউন ১৫ই মে পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন। এই লকডাউন শুরু হয়েছিল গত ১৫ মার্চ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্নমুখী প্রচেষ্টা চালানো হলেও কোনো উদ্যোগেই সফলতা আনা যাচ্ছে না। গত কয়েক দিনে মৃত্যুর হার কিছুটা কমলেও গতকাল থেকে তা আবার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া সুস্থ রোগীর হারও রেকর্ড সংখ্যকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল নতুন করে ৯ হাজার রোগী সুস্থ হওয়ার পর এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজারে। কিন্তু নতুন করে আরো ৩৪ হাজার রোগী আক্রান্ত হওয়ায় এখন যুক্তরাষ্ট্রে মোট করোনা রোগী দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজারেরও ওপরে।

গতকাল আরো দুই হাজার ১৩৭ জন মৃত্যুবরণ করায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫৮০ জনে। বিভিন্ন রাজ্যে বেড়েই চলছে মৃত্যুর মিছিল। হাসাপাতাল, ফিউনারেল, বাসাবাড়ি হিমঘর সর্বত্র পড়ে রয়েছে মানুষের লাশ। প্রতিদিন মৃত্যু হু হু করে বাড়তে থাকায় ফিউনারেল ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মানুষকে প্রত্যাশিত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আবার মারা যাওয়ার পরেও রয়ে যাচ্ছে সমস্যা।

কারণ একজন মৃত মানুষের দাফন কাফনে ব্যয় করতে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার ডলার; যা এ মুহূর্তে কর্মহীন অনেক মানুষের পক্ষে নির্বাহ করা কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। নিউ ইয়র্ক থেকে নির্বাচিত সিনেটর চাক শুমার ও আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও নিউ ইয়র্কে নিহত পরিবারগুলোকে ফিউনারেল সহযোগিতা করার জন্য ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজম্যান্ট-ফমাকে অনুরোধ জানিয়েছেন। গত ১৪ই এপ্রিল নিউ ইয়র্কের এনমাস্ট হাসপাতালের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্কের দুই প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা এই আহ্বান জানান।

বৈশ্বিক এই করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ১৬০ জনের অধিক বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট, পুলিশ কর্মকর্তা, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। এখনো অনেক বাংলাদেশী রয়েছেন হাসপাতালে যারা মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। বাংলাদেশী এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, পাকিস্তানি ও ভারতীয় অভিভাসীদের চেয়ে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশীরা বেশী আক্রান্ত হয়েছেন। এ জন্য অনেকেই অসচেতনতাকে দায়ী করেছেন। নিউ ইয়র্কে প্রবাসীদের আম্ব্রেলা সংগঠন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ সোসাইটির ১৭ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকরী কমিটির মধ্যে সভাপতিসহ দু’জন প্রথম সারির নেতা এই করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। চিকিৎসকরা মনে করছেন, শুরুতে গুরুত্ব না দেয়ায় এই রোগ পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। যারা এখনো আক্রান্ত হয়নি তাদের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য অংশ পরিণত হয়েছেন মানসিক রোগীতে। তবে আশার কথা হল বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা, মুনা, মদিনা মসজিদ, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারসহ বাংলাদেশী অনেক মসজিদ ও সামাজিক সংগঠন এগিয়ে এসেছে দুর্গত বাংলাদেশী মানুষের পাশে। মৃত ব্যক্তিদের জন্য ফ্রি কবর, ফিউনারেল সাহায্য, গ্রোসারি সাহায্যসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করে যাচ্ছে এসব সংগঠন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৬টি অঙ্গরাজ্য কম বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নিউ ইয়র্কে। নিউ ইয়র্কে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১১ হাজার। নিউ ইয়র্কের পর উদ্বেগজনক অবস্থা হচ্ছে নিউ জার্সিতে। এখানে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজার আর মারা গেছে দুই হাজার ৪৪৩ জন। মিশিগানে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার এবং মারা গেছে ১১৫ জন। ওয়াশিংটনে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার, ক্যালিফোর্নিয়ায় ২৪ হাজার, মেসাচুচেটসে ২৭ হাজার, পেনসেলভেনিয়ায় ২৪ হাজার, ফ্লোরিডায় ২১ হাজার, লুসিয়ানায় ২১ হাজার, জর্জিয়ায় ১৪ হাজার, কানেকটিকাটে ১৩ হাজার ও টেক্সাসে ১৪ হাজার। এক সাথে আক্রান্ত বেশি হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। তবে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র ব্লাজিও গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নিউ ইয়র্কের হাসপাতালগুলোতে এখন আর কোনো সমস্যা নেই। পর্যাপ্ত চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে কেউ খাবারের জন্য সমস্যায় থাকলে মেয়র ৩১১ নাম্বারে কল দেয়ার কথা বলেছেন।

জানা গেছে, মানুষের ঘরে ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য মেয়র ব্লাজিও ২৭০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল গঠন করেছেন এবং এ লক্ষ্যে শুধু ঘরে ঘরে খাবার ডেলিভারি দেয়ার জন্য ১১ হাজার ড্রাইভার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থমকে দিয়েছে পুরো যুক্তরাষ্ট্রের জনজীবন। হাজার হাজার হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, মিল-কারখানা, মার্কেট বন্ধ হয়ে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে সাড়ে ছয় মিলিয়ন মানুষ। কর্মহীনরা বেকার ভাতার জন্য আবেদন করেছে। অনেকে পেয়েছেন আবার অনেকেই অপেক্ষায় আছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। এই প্রকল্পের আওতায় বৈধ অবৈধ যুক্তরাষ্ট্রের সব মানুষকে দেয়া হচ্ছে বেকারভাতা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এতে সব ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট একটা অনুদান ছাড়াও সহজ এবং কম সুদে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু এত সব উদ্যোগ সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতি এখন এক চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে কবে কখন ফিরে আসবে স্বাভাবিক জীবন এমন প্রশ্ন এখন সবার মনে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Designed and developed by Mymensinghitpark