করোনাভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ রয়েছে যানবাহন, হোটেল ও মিষ্টির দোকান। ফলে পানির দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে খামারিদের। এতে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
গো-খামার মালিকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে কোম্পানি ও হোটেলগুলো এখন দুধ কিনছেন না। ফলে খামারের আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে কম দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। দুধের চাহিদা না থাকায় বাকীতেও বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে মাথায় হাত উঠেছে গো-খামারিদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক সরদার বলেন, ‘জেলায় বড় ধরনের প্রায় ৫০-৬০টি বড় গরুর ফার্ম রয়েছে। সাময়িক সময়ে তারা একটু খারাপ অবস্থায় আছেন বটে তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রণোদনাও আসবে।
জানা যায়, রাজবাড়ীতে ছোট-বড় প্রায় ৩শ’ খামার আছে। এরমধ্যে প্রায় ৮০টি বড় খামার। যেখান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় দুধ কিনছেন না কেউ। এছাড়া গরুর খাবারের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। ফলে খামারের কর্মীদের বেতনও দিতে পারছেন না মালিকরা।
জেলার সবচেয়ে বড় ফার্ম পাংশা উপজেলার হাবাসপুর এগ্রো লিমিটেড। যেখানে গরুর পরিচর্যার জন্য নিয়মিত প্রায় ২২ জন শ্রমিক কাজ করেন। খামারে ২৫০টি গাভী, ২০০টি বাছুর ও ১৫০টি ষাঁড় আছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৯ থেকে সাড়ে ৯শ’ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। আগে যেখানে প্রায় দেড় হাজার লিটার উৎপাদন হতো।
তবে যে দুধ উৎপাদন হচ্ছে, তাও বাজারজাত করতে পারছেন না খামারিরা। ন্যায্যমূল্যে দুধ বিক্রি করতে না পেরে শ্রমিকদের মজুরি ও পরিবহন সঙ্কটে গরুর খাবার নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। আগে প্রতিকেজি দুধ ৫০-৭০ টাকা বিক্রি হতো। এখন সেখানে প্রতিকেজি ২৫-৪০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।
খামারের শ্রমিকরা বলেন, ‘করোনার কারণে বেড়েছে গো-খাদ্যের দাম। দুধ বিক্রির টাকা দিয়েই গরুর খাবারসহ আমাদের বেতনাদি দিতেন খামার মালিকরা। কিন্তু এখন ঠিকমত বেতন দিতে পারছেন না।’
রাজবাড়ী সদরের আলিপুর ইউনিয়নের রাজবাড়ী এপিসোড এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চন্দনী ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মিজানুর রহমান শাহিনুর বলেন, ‘এখন করোনাভাইরাসের কারণে কেউ দুধ কিনছে না। প্রতিদিন খামারে প্রায় লক্ষাধিক টাকার বেশি খরচ। এখন সে খরচ মেটানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় সরকার সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে দিলে খামারিরা চরম বিপাকে পড়বে।’