চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের এলাকার প্রতিটি গার্মেন্টসে মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আমাদের তিনটি হটস্পট ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের এলাকাগুলোর বিষয়ে বিশেষভাবে দেখার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি। এখান থেকে যেন কেউ বাইরে না যায়, এবং বাইরের কেউ যেন না ঢুকে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘করোনা পরিস্থিতিতে শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে চালু রাখা সংক্রান্ত’ বিষয়ে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের মূল বিষয় ছিল পোশাক শিল্পের গার্মেন্টসগুলো কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করবে, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে মূল ফোকাস ছিল কারখানা চালানোর ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা যেন আমাদের শ্রমিকরা পায়। তারা যেখানে কাজ করবে সেখানে যেন মিনিমাম দূরত্ব থাকে, তাদের পরিবহন যাতে সঠিক হয় এবং তাদের থাকা-খাওয়ার বিষয়টিতেও যেন গুরুত্ব দেয়া হয়। তাদের সঙ্গরোধ প্রয়োজন হলে সেটি যেন করা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গার্মেন্টসে যারা মালিক আছেন তারা যেন সব সুবিধাগুলো তৈরি করে দেন। টেস্টের প্রয়োজন হলে, তারা যেন করতে পারেন। আমরাও সেসব এলাকায় টেস্টের ব্যবস্থা করব। গার্মেন্টস শিল্পের স্বাস্থ্যবিধি মনিটর করার জন্য আলাদা একটি কমিটি করা হবে। প্রতিটি কারখানায় একটি করে মেডিকেল টিম থাকবে, সেই টিম আমাদের নির্দেশনা পালনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে। তারা ন্যাশনাল কমিটির কাছে নিয়মিত রিপোর্ট করবেন।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পোশাক কারখানা পরিচালনা করা যাবে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, মালিকরা তাদের (শ্রমিক) থাকা ও খাওয়ার জায়গার বিষয়ে যেন গুরুত্ব দেন। একইসঙ্গে তাদের কোয়ারেন্টিান সেন্টার করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা আক্রান্ত হলে যাতে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখেন, সেই ব্যবস্থা যেন তারা করেন।
শ্রমিকদের পরিবহন একটি বড় সংকট, এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্যোগের কিছু নাই। মালিকরা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন। তাদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি, আনা-নেয়া, থাকা-খাওয়া সব বিষয়ে তারা যেন আরও সতর্ক হন।
এ সময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর- এই তিনটি জেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হয়েছে। কিভাবে এসব জেলার মানুষকে আলাদা করে রাখতে পারি এবং কিভাবে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বেশি সংক্রমিত হলে তাদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার করা, হাসপাতাল নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে টেস্ট কিভাবে বেশি করা যায় সেটি নিশ্চিতের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, শিল্পসচিব, শ্রমসচিব, বাণিজ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এফবিসিসিআই সভাপতি, বিজিএমইএ সভাপতি, ডিসিসিআই সভাপতি, বিকেএমইএ সভাপতি, বিটিএমইএ সভাপতি, এমসিসিআই সভাপতি এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস