কাগজ প্রতিবেদক, শেরপুর
গত ৪ আগস্ট বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে ও প্রশাসনের গাড়ি চাপায় তিন শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শেরপুরে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।শেরপুর শহরের খড়মপুর এলাকায় সদর থানায় মামলা দুটি করা হয়। মামলায় সাবেক দুই এমপি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে।শেরপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মামলা দুইটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত ৪ আগস্ট বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শেরপুর শহরের খরড়মপুর মহল্লার নতুন আইডিয়াল স্কুলে সামনের পাকা রাস্তার ওপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিল চলাকালে গুলিতে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের ছাত্র ও চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থী শ্রীবরদী উপজেলা রূপারপাড়া গ্রামের মো. আজাহার আলীর ছেলে মো. সবুজ মিয়া (১৮) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ১২ আগস্ট মামলা করেন।
এই মামলায় শেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, শেরপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান, খড়মপুর মহল্লার আব্দুল আলিম, যুবলীগ সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, পিপি অ্যাডভোকেট সুব্রত দে ভানু ও আওয়ামী লীগ নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০-৪০০ জন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় শেরপুর-১ আসনের এমপি মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান হাতে পিস্তল নিয়ে এবং খড়মপুরের আব্দুর আলিম শটগান দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাথাড়ি গুলি করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে দা, লাঠিসোটা, হকিস্টিক ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
একই দিন একই সময়ে শেরপুর শহরের খরড়মপুর মহল্লার নতুন আইডিয়াল স্কুলের সামনের পাকা রাস্তার ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনায় মিছিলকারীরা প্রাণ ভয়ে দৌড়ে পালানোর সময় ম্যাজিস্ট্রেট বহনকারী একটি সাদা পিকআপের নিচে চাপা পড়ে মাহবুব আলম ও সৌরভ নামে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনায় শেরপুর সদর উপজেলার তারাগড় কান্দাপাড়া গ্রামের মো. মিরাজ আলীর ছেলে ও শেরপুর সরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত মাহবুব আলমের মা মোছা. মাফুজা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন।