করোনাভাইরাসের কারণে ব্যস্ত মহানগরী ঢাকার সড়ক অলিগলি এখন অনেকটাই ফাঁকা। কর্মক্ষেত্রগুলোও বন্ধ। কর্মজীবী মানুষ রয়েছে ঘরে বন্দী। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মাদক কারবারিরা। তারা নানা কৌশলে মাদকের চালান ঢাকায় ঢোকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বসে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।
গত দুই দিনে র্যাবের পৃথক অভিযানে ধরা পড়েছে দুটি চালান। র্যাব বলছে, মাদক কারবারিদের ধারণা ছিল ফাঁকা রাস্তায় প্রাইভেট কার বা পিকআপ ভ্যানে করে দ্রুততার সাথে মাদকগুলো যথাস্থানে পৌঁছাতে পারবে। আর এ জন্য তারা রোগী আনতে যাচ্ছে বা দেখতে যাচ্ছে এমন অজুহাত দেখাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে তীক্ষè নজরদারি রেখেছে র্যাব।
গত রোববার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথ এবং ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে পৃথক অভিযানে চার মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, তাদের কাছে খবর ছিল করোনা প্রাদুর্ভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাদক কারবারিরা। সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিলের একটি চালান রাজধানীতে আসছে। এমন খবরে পান্থপথে চেকপোস্ট বসানো হয়। সেখানে একটি পিকআপ থামিয়ে তার চালক ও সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা পিকআপের গ্যাসের সিলিন্ডারে ফেনসিডিল রাখার কথা স্বীকার করে। পরে সেটি ভেঙে ৪৪৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় বাচ্চু ও মাহবুব নামে দু’জনকে।
তিনি বলেন, কারবারিরা এই ফেনসিডিল জয়পুরহাট থেকে এনে রাজারবাগ এলাকায় এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছিল। মূলত ওই পিকআপ ভ্যানে বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁচামাল এনে কাওরান বাজারে পৌঁছে দিত তারা। কিন্তু মাদক কারবারিরা তাদের মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে মাদকগুলো ঢাকায় পৌঁছে দিতে বলে। তারাও পিকআপে কাঁচামাল রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধোঁকা দেয়ার ফন্দি করেছিল।
একই দিন ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের নন্দন মেগাশপের সামনে আরেকটি চালান আটক করে র্যাব। এ সময় একটি প্রাইভেটকার থামিয়ে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা ইয়াবা থাকার কথা স্বীকার করে। চালকের সিটের পাশের দরজায় বিশেষভাবে লুকিয়ে আনা হয়েছিল দুই হাজার পিস ইয়াবা। গ্রেফতার করা হয় শাহবুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রতনকে।
র্যাব জানায়, এই দুই কারবারি পাবনা থেকে কক্সবাজার গিয়েছিল ইয়াবার চালান আনতে। শনিবার পাবনা থেকে রওনা হয়ে কক্সবাজার পৌঁছায়। এরপর গতকাল ইয়াবার চালান নিয়ে রওনা হয়েছিল পাবনার উদ্দেশে। পথ ভুলে ধানমন্ডিতে ঢুকে পড়লে আমাদের চেকপোস্টে ধরা পড়ে। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, এসব ঘটনায় মাদকের ব্যাপারে আরো সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। যাতে কোনো চালান জায়গা মতো পৌঁছাতে না পারে।