হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই ছড়ায় করোনা ভাইরাস। এটা বায়ুবাহিত নয়, এমনকি বাতাসে বেশিক্ষণ বেঁচেও থাকতে পারে না এই ভাইরাস। সার্স-কোভ-২ নিয়ে এখন পর্যন্ত এটাই সরকারি মত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাই জানিয়েছে।
কিন্তু সোমবার ইতালি এবং চীনের একদল বিজ্ঞানী দু’টি পৃথক সমীক্ষায় দাবি করলেন, অল্পমাত্রায় হলেও, বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই মারণ ভাইরাস। এর আগের একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, ৫ মাইক্রনের কম আয়তনের করোনা ভাইরাস ড্রপলেট এক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বাতাসে।
প্রথমে আসা যাক, চীনের বিজ্ঞানীদের সমীক্ষায়। গবেষকদের দাবি, বাতাসেও কোভিড-১৯-এর ‘জেনেরিক মেটেরিয়াল’ বা মূল উপাদানের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। তবে সেটা সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি ওই সমীক্ষায়।
উহানে করোনা মোকাবিলায় তৈরি দু’টি সর্ববৃহৎ হাসপাতালের বাইরে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস ধরে এই পরীক্ষা চালান কি লান এবং তার সহকারীরা। তাতে দেখা যায়, ভেন্টিলেটর রয়েছে এমন ওয়ার্ডগুলোর বাতাসে এই জেনেরিক মেটেরিয়ালের উপস্থিতি নগণ্য। কারণ, সেখানে বায়ু চলাচলের উপযুক্ত ব্যবস্থা আছে। অথচ এই ওয়ার্ডেরই শৌচাগারগুলোতে এর উপস্থিতির পরিমাণ বেশ। আবার যে অংশে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই বা পোশাক পরিবর্তন করতেন, সেখানকার বাতাসে করোনা ভাইরাসের আণবিক গঠনের মূল উপাদান বা সার্স-কোভ-২ আরএনএ রয়েছে। কিন্তু ভালো করে জীবাণুমুক্তকরণের পর সেখানে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু, এই আরএনএ সংক্রামক কি না, সেবিষয়ে সমীক্ষক দল নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি।
ইতালির সমীক্ষায় বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মধ্যে কোভিড ১৯-এর জিনের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। তবে সেটা কত দূরত্ব পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন। ইউনিভার্সিটি অব বলোগনার লিওনার্দো সেট্টি এই সমীক্ষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন। ইতালির বেরগামো প্রদেশের শহরাঞ্চল এবং শিল্পাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা নমুনার মধ্যে অধিকাংশতেই এই জিনের উপস্থিতি রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সেট্টির দাবি, ‘০.১ থেকে ১ মাইক্রনের ড্রপলেট বাতাসে ভেসে অন্যত্র যেতে পারে, যদি তা ১০ মাইক্রন পর্যন্ত কোনো ধূলিকণার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যায়।’
সূত্র : বর্তমান