কাগজ প্রতিবেদক
জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মনুষ্যত্ব ধ্বংসকারী ২০২১ সালের শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করে নতুন শিক্ষা পদ্ধতি প্রণয়নের দাবিতে ময়মনসিংহে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক গৌতম কর, সদস্য তানজিদা ঋতু, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিফা সাজিদা, সম্পাদক শতাব্দী কর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য নাফিস তালুকদার ঈশান, ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য শাখাওয়াত পলকসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, এই শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ করা হয়েছে। ১ম-৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও প্রতিযোগিতা থেকে মুক্ত করার নামে নম্বরভিত্তিক মূল্যায়ন তুলে দিয়ে ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ অর্থাৎ চিহ্নভিত্তিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু করে। এটা শুধু অবৈজ্ঞানিকই নয়, বাস্তবতা বিবর্জিত। পরীক্ষা ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের উপর। পড়াশোনার প্রতি তাদের আগ্রহ কমেছে। লেখা ও পড়ার সক্ষমতা কমেছে। বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও ভাষাগত দক্ষতা দুর্বল হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, এই শিক্ষাক্রমে অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ইত্যাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যার জন্য প্রয়োজন ল্যাপটপ, মোবাইল, বিভিন্ন ধরণের কাগজ, রঙিন কলম ও পেন্সিলসহ বিভিন্ন ধরণের শিক্ষা উপকরণ। এ সব উপকরণ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেড়েছে শিক্ষাব্যয়, যা শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বেড়েছে ঝরে পড়ার সংখ্যা। পাঠ্যপুস্তকে মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে সহায়ক বিষয়বস্তুকে সংকুচিত করে বাজারমুখী বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় মুক্তির লড়াইকে পরিণত করা হয়েছে দলীয় ইতিহাসে।
বক্তারা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার মতো একটি বিজ্ঞানভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।