কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত তিন দিনে আরো ৮ ব্রিটিশ বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেছেন। শনি ও রোববার বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় তাদের স্বজনরা মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। সরকারি হিসেবে আলাদাভাবে বাংলাদেশীদের মৃত্যুর খবর প্রকাশ না করলেও স্যোশাল মিডিয়া ও বাংলাদেশী কমিউনিটি মিডিয়ার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ব্রিটেনে এ পর্যন্ত ৩০ জন বাংলাদেশী মৃত্যুবরণ করেছেন।
সর্বশেষ যে ৮ জন ইন্তেকাল করেছেন তারা হচ্ছেন : লুটন শহরে চার দিনের ব্যবধানে একই পরিবারে মা ও ছেলে মৃত্যুবরণ করেছেন মহামারি করোনায়। গত ১ এপ্রিল ছেলে দীবুল আহমদ ( ৫৪) ইন্তেকাল করেন। ছেলের মৃত্যুর ৪ দিন পর ৫ এপ্রিল মারা যান দীবুল আহমদের মা। শুধু মা-ছেলের মৃত্যুই শেষ নয়, আক্রান্ত হয়েছেন দীবুল আহমদের পিতা হাসান আহমদ এবং অন্য তিন ছেলে।
ব্যবসায়ী দীবুল আহমদের দেশের বাড়ী সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউপির ভাংগী গ্রামে। তিনি ব্রিটেনে ও বাংলাদেশে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তার মৃত্যুতে লুটনে বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও শোকের ছায়া নেমে আসে।
এদিকে গ্রেটার ম্যানচেষ্টারস্থ হাইডের বাসিন্দা হাইড জামে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী মনসুর খান ৩ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার দেশের বাড়ী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আসার কান্দি ইউনিয়নের তিলক গ্রামে। হাজী মনসুর খান হার্টে সমস্যায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হলে তিনি মারা যান । মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ১ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
শনিবার রাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন গ্রেটার ম্যানচেস্টারের হাইডের বাসিন্দা মোঃ আকিকুর রহমান। তিনি টেইমসাইড জেনারেল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে শুধু হাইডে ৫ জন বাংলাদেশি করোনায় মারা গেছেন। মরহুম আকিকুর রহমানের দেশের বাড়ী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর গ্রামে।
এদিকে রাজধানী লন্ডনে শনিবার সকালে ইন্তেকাল করেছেন ইসলামিক স্কলার আবু সাঈদ আনসারীর শাশুড়ী। তিনি প্রবীন মুরব্বি সানোয়ার আলী স্ত্রী রূপজান বিবি। তিনি মিডলসেক্স হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগলেও সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। কিছু দিন তাকে হাসপাতালেও রাখা হয়। ওয়েস্ট লন্ডনের বাসিন্দা রুপজান বিবি ৪ মেয়ে ২ পুত্র সন্তান রেখে গেছেন। তার দেশের বাড়ী সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজারের বনগাঁও গ্রামে।
রোববার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এনামুল ওয়াহিদ (৩২) নামে আরও এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউকে বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি কে এম আবু তাহের চৌধুরী। বাংলাদেশে এনামুল ওয়াহিদের বাড়ি নবীগঞ্জের মোস্তফাপুর। তিনি লন্ডনের চেডওয়েলহিথের বাসিন্দা। এর আগে গত সপ্তাহে এনামুলের বড় ভাইও করোনায় মারা গেছেন।
এদিকে লন্ডনের ইলফোর্ডের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন ব্যবসায়ী দিলাল আহমদ। ৩ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তার দেশের বাড়ী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার পূর্ববাঘা ইউনিয়নের তুড়–গাও গ্রামে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
শুক্রবার সকালে লন্ডনের ইজলিংটনের বাসিন্দা এরশাদ মিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হোমারটন হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার দেশেরবাড়ী মৌলভীবাজারের পাগুলিয়ায় বলে জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী। মরহুম এরশাদ মিয়া সম্পর্কে এর চেয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।