দশ শতাংশ প্রণোদনা ছাড় করতে ভালো ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতার মানদণ্ড পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
একইভাবে এই শ্রেণির গ্রহীতাদের জন্য উপযুক্ত নগদ পুরস্কার ও স্বীকৃতি সম্মাননাসহ আরও বিশেষ কিছু সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন এই মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংককে তাদের ঋণ ও বিনিয়োগ গ্রহীতাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করে ভালো ঋণ ও বিনিয়োগ গ্রহীতা বাছাই করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ভালো গ্রহীতাদের জন্য সুখবর দিয়ে বলা হয়, তাদের জন্য রয়েছে রিবেট ছাড়াও আর্থিক পুরস্কার ও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি সম্মাননার ব্যবস্থা। যা আয়োজন করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো।
এ প্রসঙ্গে সার্কুলারে বলা হয়, তিন বছর বা আরও বেশি সময় ধরে যারা ভালো ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত সেসব গ্রাহকদের ছবি, প্রোফাইল ইত্যাদির সমন্বয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বিশেষ বুকলেট/ম্যাগাজিন প্রকাশ করতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রথম প্রকাশের ক্ষেত্রে গ্রহীতাদের সংখ্যা অধিক হলে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় ধরে যারা ভালো গ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন তাদের নাম বিশেষ বুকলেট/ম্যাগাজিনে অন্তর্ভুক্ত করতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়া ব্যাংক বার্ষিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের সম্মাননা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তবে এর জন্য গ্রহীতাদের তথ্য সিআইবিতে স্ট্যান্ডার্ড গুড বরোওয়ার (এসটিডি-জিবি) হিসেবে অবশ্যই রিপোর্ট করতে হবে। সার্কুলারে বলা হয়, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বহাল থাকছে ১০ শতাংশ প্রণোদনা
১৬ মে জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলারের প্রেক্ষিতে ভালো ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতা চিহ্নিত করে তাদের অনুকূলে প্রদেয় ঋণ বা বিনিয়োগ সুদে ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলমান/তলবি/মেয়াদি ঋণ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর শেষে বিগত ১২ মাসে (অর্থাৎ বিগত বছরের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) গ্রহীতার সংশ্লিষ্ট ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে আদায়কৃত সুদ/মুনাফার ১০ শতাংশ রিবেট সুবিধা দেওয়া অব্যাহত থাকবে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত বিআরপিডি সার্কুলালের মাধ্যমে সময়সীমা বাড়িয়ে ১ এপ্রিল থেকে ঋণ/বিনিয়োগের ওপর সুদ/মুনাফার সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, এর মাধ্যমে কোনও গ্রাহক ভালো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হলে তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত রিবেট প্রাপ্য হবেন।
ভাল গ্রহীতার মানদণ্ড পুনর্নির্ধারণ
সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক কর্তৃক ভালো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা চিহ্নিতকরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস শেষে তা পর্যালোচনা করতে হবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যারা ভালো গ্রহীতার ক্যাটাগরিতে পড়বেন তারা হচ্ছেন—চলমান ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতার ঋণ অথবা বিনিয়োগ হিসাব সংশ্লিষ্ট বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এবং অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৪টি ত্রৈমাসিকে অশ্রেণিকৃত-স্ট্যান্ডার্ড অবস্থায় থাকলে এবং মঞ্জরি/নবায়ন পত্রের শর্তানুসারে ওই ঋণ/বিনিয়োগ হিসাবে লেনদেন সন্তোষজনক হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ভালো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া তলবী ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতার সংশ্লিষ্ট বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এবং অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৪টি ত্রৈমাসিকে সকল তলবী ঋণ/বিনিয়োগ অশ্রেণিকৃত-স্ট্যান্ডার্ড অবস্থায় সমন্বিত হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ভালো গ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হবেন।