বরগুনায় ডিমসহ মাছরাঙা পাখি জবাই করে হত্যা ও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার অভিযোগে কামরুজ্জামান ফারুক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্য প্রাণি সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তালতলী থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সাগর কর্মকার নামের একজন পাখিপ্রেমি বাদি হয়ে তালতলী থানায় এ মামলাটি দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গাছের কোটর থেকে ডিমসহ একটি পাখি ধরে আনেন কামরুজ্জামান ফারুক নামের এ ব্যক্তি। সোমবার সন্ধ্যায় জবাই করা একটি মাসরাঙা পাখি ডিমের পাশে পড়ে আছে এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন ফারুক।
সেই ফেইসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট ও ছবিগুলো নিয়ে বরগুনার প্রকৃতিপ্রেমি ও সাংবাদিক রুদ্র রুহান এমন ঘটনার বিচার দাবি করে আরো একটি পোস্ট করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় ওঠে। মুহূর্তেই পাখিপ্রেমি ও সচেতন মহলের তোপের মুখে পড়েন কামরুজ্জামান ফারুক। পরবর্তীতে নিজের ফেসবুক আইডি ডিএক্টিভেট করে ফেলেন তিনি।
কোস্টাল এনভারনমেন্ট প্রটেকশন নেটওয়ার্ক-এর সমন্বয়ক রুদ্র রুহান বলেন, মাছরাঙা পাখি বাংলাদেশে প্রায় বিলুপ্ত একটি পাখির জাত। প্রজনন সময় ফেব্রয়ারির মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এছাড়াও বছরের যে কোনো সময়েও মাছরাঙা ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফোটায়। জলাশয়ের খাড়া পাড়ে বা পুরানো গাছের কোটরে বাসা বাধে এরা। ডিম পাড়ে দুই থেকে ছয়টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৯-২০ দিন। বাচ্চা ২০/২৫ দিনের মধ্যেই উড়তে শেখে।
মামলার বাদি সাগর কর্মকার বলেন, ২০১২ সালের বন্য প্রাণি সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রোটেকটেড বার্ড বা সুরক্ষিত এসব পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। অপরাধীর এক বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে পাখি হত্যায় দায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করি।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, পাখি হত্যার বিষয় তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।