সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার ১২দিন পর পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার ছেলে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস এবং বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরমান হোসেনসহ ২৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুন) মামলা দুটি হয়েছে বলে জানান বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম।
ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ফারুক সরকার বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার ছেলে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস, ভাতিজা নান্নু বিশ্বাস ও পৌর কাউন্সিলর যুবদল নেতা আলম প্রমানিকসহ ৬৬ জনের নাম উল্লেখ এবং ১২০ থেকে ১৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, সাবেক মন্ত্রীর ছেলে দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর লাজুক বিশ্বাস বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরমান হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াদ আহম্মেদসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জোকনালা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী শিক্ষিকা উম্মে জহুরার একটি পরিত্যক্ত পুকুর নিয়ে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে ৬ জুন বিকেলে জোকনালা বাজারে সালিশ ডাকা হয়। নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা খানেক আগেই রফিকুল ইসলামের পক্ষে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন সেখানে হাজির হন।
শালিস শুরু হতে বিলম্ব হওয়ায় তারা প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পথে সগুনা চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে শিক্ষিকার পক্ষে তার নিকট আত্মীয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল ও ট্রাকে যাবার পথে শতাধিক লোকজন সেখানে মুখোমুখি হয়।
এসময় উভয়পক্ষের লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে লতিফ বিশ্বাসের পক্ষে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন এবং তার পেটে খুর দিয়ে জখম করা হয়। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন আহত হন।
অপরপক্ষে, যুবলীগ নেতা রেজা গ্রুপের যুবলীগের কর্মী নাজমুলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ৪০টি মোটরসাইকেল, একটি মাইক্রোবাস ও ট্রাক ভাংচুর করা হয়।
এ ঘটনার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এবং বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা একে অপরকে দায়ী করেছিলেন।