ঈদুল আযহায় রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট বসানো নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন হাটে আসতে পারেন সে বিষয়টি এবার বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূ্ত্রে জানা গেছে, এবার কোরবানির হাট বসানোর বিষয়ে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এবার ১০টি স্থানে পশুর হাট বসানো হবে। এরমধ্যে (সম্ভাব্য) উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের অংশ এবং ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্তর পর্যন্ত সড়কের ফাঁকা জায়গা; ভাটারা পশুর হাট; ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ; বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা (আফতাবনগর); মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়কের পাশে পুলিশ লাইনের খালি জায়গা; মিরপুর সেকশন-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা; উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা; কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা; ভাষানটেক রাস্তার নির্মাণাধীন অব্যবহৃত-পরিত্যাক্ত অংশ এবং পাশের খালি জায়গা। এছাড়া আরও একটি হাট পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্রে জানা গেছে, এবার ১৪টি পশুর হাট বসানো হবে। এ বিষয়ে করপোরেশন থেকে ১৪ জুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে- উত্তর শাহজাহানপুরের মৈত্রী সংঘ মাঠ এলাকার খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলোজি মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, কামরাঙ্গীরচরের ইসলাম চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে দক্ষিণ বুড়িগঙ্গা বাঁধ পর্যন্ত খালি জায়গা, পোস্তাগোলা শ্মশান ঘাট এলাকার খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা,মেরাদিয়া বাজারের আশপাশের খালি জায়গা, আরমানিটোলা মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠ সংলগ্ন ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকা, আফতাব নগরের (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক ই, এফ, জি ও এইচ এবং সেকশন-১ ও ২ এর খালি জায়গা, আশুলিয়া মডেল টাউনের খালি জায়গা এবং লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠের আশপাশের খালি জায়গা।
দুই সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, করপোরেশনের আয়ের অন্যতম একটি খাত হলো পশুর হাট ইজারা দেওয়া। তবে এ বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিগত বছরগুলোর তুলনায় আয় কম হতে পারে।
সূত্র বলছে, করোনার সংক্রমণের হার কোন দিকে যাচ্ছে সে বিষয়টি দুই সিটি করপোরেশনই পর্যবেক্ষণ করছে। ঈদ আসতে এখনো প্রায় দেড় মাসের মতো বাকি রয়েছে। এ সময়ে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাহলে ইজারামূল্য বেশি আসতে পারে।
পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে দুই সিটি করপোরেশন। এক্ষেত্রে তারা ইজারাদারকে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের শর্ত দেওয়া হবে। পাশাপাশি পশুর হাটে যেন সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি যেন নিশ্চিত হয় সে বিষয়ে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হবে।
ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, পশুর হাটের বিষয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। ড্রপিং হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সরকারের যে নির্দেশনা আছে এটা ক্রেতা-বিক্রেতাকে হুবহু মানতে হবে। এ বিষয়ে হাটে মাইকিং করা হবে। পোস্টার, লিফলেট ব্যানারের মাধ্যমেও সচেতন করা হবে।
এ বছর আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আয়ের বিষয়ে আমাদের কোনো প্রেডিকশন নাই। গত বছর যেটা তিন কোটি টাকা ছিল সেটা এবার দর আসতেছে ৭০ লাখ টাকা। অপেক্ষা করছি বাড়ে কি-না। তবে এ বছর প্রেডিকশন করা যাচ্ছে না। এছাড়া হাট শুরু হওয়ার পর ওই এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করলে ব্লক করে দেওয়া হবে। তখন তো হাট জমতেই দেওয়া হবে না। তবে এখনো প্রচুর সময়, দেখা যাক যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয়।
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, এবার আমরা ১৪টি হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছি।