১০ টাকা কেজির ওএমএস-এ চাল বিক্রিতে কালোবাজারি বা চুরির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রয়োগের নির্দেশ প্রদান করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। শনিার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের চিঠি দিয়ে এই নির্দেশ প্রদান করেন খাদ্যমন্ত্রী।
ডিসি ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের বরাবর লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি’র আলোকে প্রতি পরিবারকে ৩০ কেজি করে ৫০ লাখ পরিবারকে ১০টাকা কেজি দরে চাল দেয়া হচ্ছে। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির এই চাল ডিলার মারফত কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে নভেল-১৯ করোনাভাইরাস-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও এর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং এর প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ওএমএস খাতে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের মূল্য ৩০ টাকার স্থলে ১০ টাকা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন। তৎপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত ওএমএস খাতে চালের মূল্য প্রতি কেজি ১০ টাকা নির্ধারণ করে। অতৎপর খাদ্য মন্ত্রণালয় সরকার কর্তৃক জারিকৃত সাধারণ ছুটির কারণে গৃহে অবস্বথানকারী সাধারণ শ্রমজীবি, দিনমজুর, রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহণ শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও অন্যান্য সকল কর্মহীন মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কার্যক্রম গ্রহণ করে।’
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘এ কর্মসূচির আওতায় ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী বিভাগীয় ও জেলাশহর এবং জেলাশহর বহির্ভুত পৌরসভাসমূহে প্রতি রোব, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও পৌরসভার নির্বাচিতপ্রতিনিধির উপস্থিতি/তদারকিতে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একজন ভোক্তা সপ্তাহে একবার মাত্র ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবে। ওএমএস কেন্দ্রসমূহ নিম্ন আয়ের জগোষ্ঠি, শ্রমজীবীদের বসবাস কেন্দ্রের নিকটস্থ বস্তি এলাকায় অথবা পর্যাপ্ত খালি জায়গা আছে এমন স্থানসমূহে অস্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে নির্বাজন করা হয়েছে।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘ইদানিং কিছু পত্রপত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, কতিপয় ব্যক্তি ওএমএস-এর চাল কালোবাজারে বিক্রিকরছে। যা এই কর্মসূচিকে প্রশ্নবিদ্ধ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। আপনাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশের কয়েকটি জায়গায় ওএমএস-এর চালসহ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছে বলে খবর বেরিয়েছে। আপনি (ডিসি) অবগত আছেন যে, মাননীয় পধানমন্ত্রী ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং সাম্প্রতিক সময়ে তার জেলা প্রশাসকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রদত্ত ভাষণে ত্রাণ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত কোনো প্রকার দুর্নীতিকে ছাড় দেয়া হবে না মর্মে তিনি উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও গত ১ এপ্রিল খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি/ওএমএস কার্যক্রমে যেকোনো প্রকার অনিয়মে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। এমতাবস্থায় সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ-এর প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কেজি প্রতি ১০ টাকা মূল্যে ওএমএস-এর চাল বিক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ওএমএস-এর চাল কালোবাজারি/চুরি সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করার জন্য আপনাকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’