ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া প্রবাসীর স্ত্রীর পর এবার তার শিশুকন্যা (৩) ও ভাই (১৯) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আক্রান্তদের করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সানজিদা আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় জানান, গত ১৪ এপ্রিল করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ব্যক্তির মা-বাবা, স্ত্রী ও সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ওই দিনই তার স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। আজ তার শিশুকন্যা ও ভাইয়ের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। তার মায়ের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো আসেনি। করোনা আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের জন্য জেলা সদরে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের মকবুলপুর গ্রামের এক প্রবাসী একই গ্রামের গোকর্ণ ইউনিয়নে শ্বশুরবাড়িতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ৩৫ বছর বয়সী ওই প্রবাসী গত ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। এরপর নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। তবে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে তার শারীরিক কোনো সমস্যা হয়নি। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল তিনি কিছুটা অসুস্থতা বোধ করলে তার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় তার টাইফয়েড ধরা পড়ে, তবে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। এরপর ৭ এপ্রিল রাতে শ্বশুর বাড়িতে জ্বর, কাঁশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করলে রেজাল্ট পজেটিভ আসে। এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর নিজ বাড়ি ও তার শ্বশুর বাড়ি লকডাউন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি পূর্বভাগ ও গোকর্ণ ইউনিয়নের মানুষজনের চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এর আগে বুধবার জেলার আখাউড়া উপজেলার এক নারী ও এক পুরুষের করোনাভাইরাস রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জনে দাঁড়ালো। এর মধ্যে মারা গেছেন তিনজন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৯৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০৮ জনের পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এছাড়া ১৫ এপ্রিল সকাল ৮টা থেকে ১৬ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত নতুন করে ৯০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। একই সময়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৪ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৮০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১১ জন। আইসোলেশনে আছেন নয়জন।