আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণকে কেন্দ্র করে বিএনপি অহেতুক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করছে।
তিনি বলেন, ‘ডাঃ মঈনের মৃত্যু নিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেব অহেতুক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। করোনা এমন একটি ভাইরাস যা সংক্রমণ থেকে কেউই রক্ষা পাচ্ছেন না। দেশে দেশে বহু চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন। কাজেই এ নিয়ে অহেতুক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করা মোটেও সমীচীন নয়।’
সেতুমন্ত্রী আজ শুক্রবার দুপুরে তার সরকারি বাসভবনে দেশের চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনায় মৃত্যু বরণকারী ডাক্তার মঈনের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। তবে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি বিএনপি মহাসচিব তার মৃত্যু নিয়ে অহেতুক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল ইসলামকে সবিনয় জিজ্ঞেস করতে চাই যে,সারা পৃথিবী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এখানে ধনী-দরিদ্র, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। করোনা কাউকে রেহাই দিচ্ছে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের এই দুর্যোগে জাতি হিসেবে আমাদের বিভক্তি কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। এ সময় বিভাজন এর অনিবার্য পরিণতি ভাইরাসের ভয়ঙ্কর রূপ। আমরা জেনে শুনে যেন এরকম মারাত্মক ভুলের ফাঁদে পা না দেই। মনে রাখতে হবে এ লড়াই আমাদের সকলের বাঁচার লড়াই। এ লড়াইয়ে নিজে বাঁচতে হবে এবং অপরকেও বাঁচাতে হবে। পরস্পর পরস্পরকে সুরক্ষা না দিলে আমাদের নিজেদের সুরক্ষাই হুমকির মুখে পড়বে।
দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্ব করোনা মোকাবেলায় আমাদের ঘরে ঘরে সচেতনতার দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। আমরা যদি সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সকলে ঘরে থাকি, ইনশাআল্লাহ তাহলে আমাদের জয় হবেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যন্ত ত্রাণ কমিটি গঠন করে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণে কোনরকম অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা ইতোমধ্যে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। দলীয় পরিচয় কেউ ত্রাণ নিয়ে নয়ছয় করলে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণে বিশ্বের ২১০টি দেশ আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৪তম। তুলনামূলকভাবে আমরা ইউরোপের দেশগুলোর চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছি। ঐক্যবদ্ধ ভাবে করোনা মোকাবেলা করতে পারলে এ সংকটের কালো মেঘ কেটে যাবে।
তিনি বলেন, এই সংকটকালে যারা সামনে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা র্যাব-পুলিশ, সেনাবাহিনী, গণমাধ্যম ও জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন সরকার গঠন করা হয়। সেদিনই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। আজকের সারাবিশ্বব্যাপী মহাদুর্যোগ করোনাভাইরাসের কারণে দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করতে না পারলেও আমাদের চেতনায় বিশ্বাসে এ ঐতিহাসিক দিনটির তাৎপর্য চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। সূত্র : বাসস