গাজীপুর মহানগরে করোনা চিহ্নিত দুই শিশুর শরীরে গত দুই সপ্তাহেও কোনো ধরণের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। দুই শিশুসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের শরীরেও করোনার কোনো লক্ষণ নেই। তাদের দাবী, তারা সুস্থ্য, করোনা আক্রান্ত নন।
মহানগরের সুকন্দির বাগের (হায়দরাবাদ) স্থানীয় বাসিন্দা ওই দুই কন্যা শিশু পরস্পর চাচাতো বোন। তাদের একজনের বয়স ১০ ও অপরজনের ১৪ বছর। ছোট শিশুটির বাবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা।
তিনি জানান, তাদের বাড়ির পাশের পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকে গত ৭ এপ্রিল একজন সন্দেহভাজন করোনা রোগীর নমুনা নেওয়া হচ্ছিল। তখন শিশু দুটি ওই ক্লিনিকের পাশে খেলা করছিল। এসময় তারা খেলাচ্ছলে ওই ক্লিনিকে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা শিশু দুটির নাক থেকে নমুনা নেয়। সেই নমুনা ঢাকায় পাঠানো হলে আইইডিসিআর থেকে তাদের উভয়ের কভিড-১৯ পজিটিভ আসে। কিন্তু ওই দুই শিশুসহ তাদের পরিবারের কারোর মধ্যে করোনা সংক্রমণের কোনো লক্ষণ কখনো ছিল না এবং এখনো নেই।
আইইডিসিআর’র উক্ত রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিশুটির বাবা বলেন, শিশুরা আক্রান্ত হওয়ার আগে আমাদের বড়দের আক্রান্ত হওয়ার কথা। কারণ আমাদেরকে বিভিন্ন জরুরী কাজের প্রয়োজনে বাহিরে যেতে হয়। আমরা আগে আক্রান্ত হলে তবেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের কারোর ভেতর এখনো পর্যন্ত কোনো ধরণের লক্ষণই নেই। তবুও ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়।
এ অবস্থায় বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত ১০ এপ্রিল শিশু দুটিকে টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাদের কোভিড-১৯ নেগিটিভ। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের উক্ত রিপোর্ট নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে দেখানো হলে তারা এটি বিশ্বাস করতে নারাজ।
এদিকে এ ব্যাপারে টঙ্গী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মুক্তিযোদ্ধা ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ওই দুই শিশু সম্পূর্ণ করোনামুক্ত। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র চীন থেকে ব্যক্তিগতভাবে যেসব কিট আমদানী করেছেন এসব কিটকে অত্যন্ত উন্নত মানের দাবী করে ডা. নাজিম আরো বলেন, গাসিক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আমাদেরকে যেসব কিট সরবরাহ করেছেন তা কোভিড-১৯ পরীক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।
এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিশু দুটি করোনায় আক্রান্ত এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাদের কারোর শরীরে কোনো লক্ষণ না থাকার বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, করোনায় অনেকের শরীরে লক্ষণ প্রকাশ পায় না।