করোনাভাইরাস নামক প্রাণঘাতী রোগ সারা পৃথিবীকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। মানব সম্পর্কের মাঝে বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি করেছে। কেউ কাউকে চিনছে না। করোনায় কেউ আক্রান্ত হলে তার পাশে থাকছেনা কেউ। আত্নীয়-স্বজন এমনকি পরিবারের সদস্যরাও সবাই দূরে সরে থাকছে।
অথচ নিজের জীবন চরম ঝুঁকিতে ফেলে জীবন-মৃত্যুর মুখে থাকা করোনায় আক্রান্ত স্ত্রীর সেবায় তার পাশে সর্বক্ষণ থেকে ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী। স্ত্রীর প্রতি তার এই ভালোবাসা সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
যেহেতু স্ত্রী রেবেকা সুলতানা সাজু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সেহেতু চিকিৎসকরা তাকে ও তার একমাত্র মেয়ে কানিজ ফাতেমা চৈতির করোনা নেগেটিভ আসায় তাদেরকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিন্তু স্ত্রীর প্রতি অবিরাম ভালোবাসার কারনে মেয়েকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিলেও রাজাধানীর কুমিটোলা হাসপাতালের কেবিন ছাড়েনি তিনি। চিকিৎসকদের সাফ কথা জানিয়ে দিয়েছেন, তার স্ত্রীর এই দু:সময়ে তাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না তিনি। চিকিৎসকদের পাশাপাশি রাত-দিন স্ত্রীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে রেখেছেন তিনি।
কাজী কেরামত আলী’র মেয়ে কানিজ ফাতেমা চৈতি নয়াদিগন্তকে বলেন, আমার বাবা একজন আদর্শ স্বামী। আমার মায়ের এই সংকটময় মূর্হতে আমরা সবাই মাকে হাসপাতালে রেখে আসলেও আমার বাবা কিন্তু আসেননি। আম্মুকে ছেড়ে বাবা কোথাও যাবেন না বলে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। এমন একজন পুরুষ আমার বাবা যাকে নিয়ে সন্তান হিসাবে আমি গর্ব করি। স্ত্রীর প্রতি তার যে নিবিড় ভালোবাসা তা স্বরণীয় হয়ে থাকবে। স্যালুট বাবা…
উল্লেখ্য, ১৩ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ্য হলে এমপি’র স্ত্রী রেবেকা সুলতানা সাজুকে (৫২) করোনাভাইরাস পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তখনই তার সংস্পর্শে আসা এমপি ও তার মেয়েকে করোনা টেস্ট করালে তাদের নেগেটিভ আসে এবং তাদের দুজনকেই হোম কোয়ারেন্টে থাকার পরামর্শ দিয়ে এমপি’র স্ত্রীকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।