ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামে স্থানীয় বিবাদ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শহীদ মাতুব্বর (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছে। আর এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২৫ জন। আজ সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুই ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে উভয় পক্ষ হতেই আবারো সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
নিহত শহীদ মাতুব্বর লক্ষিপুর গ্রামের জয়নাল মাতুব্বরের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ওই গ্রামের প্রভাবশালী শাহজাহান মাতুব্বরের সাথে জাহাঙ্গির মাতুব্বরের সমর্থকদদের এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষ দীর্ঘ দিন যাবত পরস্পর বিবাদে লিপ্ত। তারা উভয়েই ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকালে পাশর্^বর্তী ফাজেলপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির জমিতে টিউবঅয়েলের পানি যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে জাহাঙ্গির মাতুব্বরের কথা কাটাকাটির পর ধাক্কাধাক্কি হয়। এনিয়ে পরে লক্ষিপুর গ্রামে জাহাঙ্গিরের সমর্থক তোতা মিয়ার সাথে শাজাহান মাতুব্বরের সমর্থক এসকেন্দারের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে শাহজাহানের সমর্থক শহীদ মাতুব্বর গুরুতর আহত হলে তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুর জানান, খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।লেও দু’পক্ষের সমর্থকরা আবার বিরোধে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গত দুই মাসে ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সংঘঠিত প্রায় ১০টির মতো সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা না হওয়ায় দাঙ্গাবাজরা এসব মারামারিতে উদ্বুদ্ধ হয়। অনেকে থানায় মামলা করতে গেলেও তাদের মামলা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারপাড় গ্রামের সামসুদ্দিন মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে মারাত্মক আহত করার পর হাসপাতালে ২২টি সেলাই লাগে শরীরে। অথচ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরেও মামলা হয়নি। পরে ফরিদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে অভিযোগ দাখিল করার পর ৭২ ঘন্টার মধ্যে মামলা রুজুর নির্দেশ দেন আদালত। পুলিশের এহেন ভুমিকায় দুর্বৃত্তরা সাহস পাচ্ছে বলে তিনি জানান।