করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগের মধ্যে দেশের ৬৮টি কারাগারে গাদাগাদি অবস্থায় আছে কারাবন্দীরা। এদিকে হাসপাতালে বন্দীদের পাহারায় থাকা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কারারি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ কারণে তার সাথে কর্তব্যরত আরও তিন কারারিকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
আইনজীবীদের মতে দেশের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বেশি কারাবন্দী গাদাগাদি অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় কারাগারগুলোতে যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য রাজনৈতিক বন্দী এবং লঘু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের শর্তসাপেক্ষে হলেও মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বিনা বিচারে যারা আটক আছেন তাদের সরকার মুক্তি দিতে পারেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক বিবেচনায় যারা অভিযুক্ত আছেন তাদেরকে সরকার সদায় বিবেচনায মুক্তি দিতে পারেন। এই মহামারী সময় তারা মুক্তি পেলে অন্তত পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারবেন।
এ বিষয়ে প্রবীণ আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, কারাগারগুলোতে বন্দীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। বর্তমানে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে বিচার কার্য দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এ জন্য আসামিরা জামিন নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। এই অবস্থায় কোনো বন্দী যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। অতি দ্রুততার সাথে তার বিস্তার লাভের আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় সরকার শর্তসাপেক্ষে বন্দীদের মুক্তি দিলে কারাগারে ধারণ ক্ষমতার থেকে অতিরিক্ত বন্দী রাখার হাত থেকে মুক্ত হবে। এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহ পরিণতি থেকে কারাগারমুক্ত হবে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন আরো বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি সরকার বিভিন্ন সময় লঘুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি ও দুই-তৃতীয়াংশ সাজা খাটা আসামিকে মুক্তি দিয়েছে। আমাদের জেলখানায় জনবলের স্বল্পতা রয়েছে ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সীমিত।
এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিনা বিচারে যারা আটক আছেন তাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিবেচনায় যারা অভিযুক্ত আছেন তাদেরকে সরকার যেন মুক্তি দেন আমরা সেই আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সারা দেশে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী কারাগারে আটক আছে। অনেকে রাজনৈতিক বন্দী আছে। এই মহামারীর সময় তারা মুক্তি পেলে অন্তত পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারবেন।