বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভিআইপিদের জন্য করোনা চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল করা হলে সেটা হবে সংবিধান পরিপন্থী কাজ। তিনি বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি টাকাওয়ালা বড়লোকদের জন্য স্পেশাল হাসপাতাল বানানো হচ্ছে। করোনা হলে তাদের সেখানে চিকিৎসা দেয়া হবে। কিন্তু গরিব মানুষদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করেনি সরকার। যাদের টাকা আছে তাদের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। সেটা পাবে যারা ব্যবসায়ী ব্যাংকের মালিক, গার্মেন্টসের মালিক। তার মানে হচ্ছে বড়লোকেরা সব পাবে আর গরিব মানুষরা মরে যাক, ওদের লাশ রাস্তার পড়ে থাক- এটাই সরকারের নীতি। এভাবে চলতে পারে না।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখানে ত্রাণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর উদ্যোগে সেখানে গরীব অসহায় ও দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, আমরা বারবার বলেছি বিএনপি-আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মিলে মহামারি বিপদকে মোকাবেলা করি। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সরকার তা শুনছে না। লুটপাট আর চুরির জন্যই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চায় না।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ জনগণের টাকায় কেনা। সেই ত্রাণ আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরের ভেতর থেকে হাজার হাজার বস্তা চাল বের হচ্ছে। খাটের মধ্য থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে ত্রাণের চাল-ডাল-তেল পাওয়া যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জে একটি মেয়ে খাবার না পেয়ে আত্মহত্যা করছে। সারাদেশে ভয়ঙ্কর ক্ষুধার হাহাকার চলছে।
তিনি বলেন, করোনার মহামারি পরিস্থিতিতে ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা মানুষের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কোনো সরকারের ত্রাণ পাইনি। বিএনপির নেতাকর্মীরা পকেটের টাকায় গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষদের সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ করে চলছে।
বিএনপির সিনিয়র এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। এতে ভীষণ আতঙ্ক সারাবিশ্বব্যাপী বিরাজ করছে। শুধু রোগাক্রান্ত হচ্ছে না, মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে। ভয়াবহ শঙ্কার মধ্যে প্রতিটি মানুষ জীবনযাপন করছে। সারাদেশ লকডাউনের মধ্যে পড়েছে। অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে গেছে। কল কারখানা স্কুল-কলেজ বন্ধ কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নআয়ের মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুধা-দারিদ্রতার মধ্যে দিনযাপন করছে। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতির জন্য যেরকম পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন ছিল তা সরকার নেয়নি।
তিনি বলেন, যখন করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল তখন সরকার পদক্ষেপ নেয়নি। দেশে এখন হাহাকার চলছে। রাস্তাঘাটে বিভিন্ন জায়গায় লাশ পড়ে থাকছে। একজন লোক আক্রান্ত হলে কি ধরনের প্রস্তুতি নেয়া দরকার তা না থাকায় ঘরের মধ্যে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেশে সৃষ্টি হয়েছে।