চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের মারধর ও হেনস্থা থামাতে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের আক্রমণ করলে, তাদের মারধর করলে অভিযুক্তদের কড়া সাজার ব্যবস্থা করা হলো। চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের আক্রমণ করা হলে তিন মাস থেকে পাঁচ বছর জেল ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আর এই অভিযোগে গ্রেফতার হলে জামিন পাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের আঘাত গুরুতর হলে ছয় মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। সেই সঙ্গে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। কোনো বাড়িওয়ালা বা প্রতিবেশী চিকিৎসক ও নার্সদের ঘরছাড়া করলে তারাও শাস্তির মুখে পড়বেন। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেছেন, ”চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের সুরক্ষার প্রশ্নে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে চলবে। সরকার চায়, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনো রকম টেনশন ছাড়া কাজ করুন।”
করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালেও চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা হেনস্থার মুখে পড়েছেন। এই অবস্থায় তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে আইন বদল করে অত্যন্ত কড়া ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। আপাতত সংসদ চলছে না বলে অর্ডিনান্সের মাধ্যমে এই কড়া ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবার এই অর্ডিনান্সে সই করে দিয়েছেন। পরে সংসদের অধিবেশন বসলে ১৮৯৭ সালের এপিডেমিক ডিজিসেস আইন সংশোধন করা হবে। চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ প্রতিবাদ শুরু করার হুমকি দিয়েছিল। তারপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্যবর্ধন আইএমএসহ চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেন এবং কড়া আইনের আশ্বাস দেন। তারপর আইএমএ তাদের প্রস্তাবিত প্রতিবাদ স্থগিত রাখে।
জাভড়েকর জানিয়েছেন, ”সারা দেশে এখন ৭২৯টি করোনা হাসপাতাল আছে। সেখানে এক লাখ ৮৬ হাজার বেড আছে। আইসিইউতে ২৪ হাজার বেড আছে। চিকিৎসকরা দিন রাত সেখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন।”
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৪০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৩৯৩ জন। মারা গেছে ৬৮১ জন। দ্বিতীয় পর্বের লকডাউন সত্ত্বেও আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। এর মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রে। গুজরাট ও দিল্লিতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
করোনা ও লকডাউনের ফলে শিল্পের অবস্থা শোচনীয়। ছোট থেকে বড় সব ধরনের শিল্প এখন সরকারি প্যাকেজ চাইছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি স্তরে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। সরকারও বুঝতে পারছে, প্যাকেজ জরুরি। কিন্তু প্যাকেজ দিতে গেলে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে। সরকারেরও টাকার টানাটানি। তাই অবিলম্বে প্যাকেজ ঘোষণার আশা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র : ডয়চে ভেলে