সংক্রামণ সুরক্ষানীতি উপেক্ষা করে গাজীপুরে বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে বৃহষ্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার গেইটে অবস্থান ধর্মঘট করে। পরে পুলিশের সহযোগীতায় বেতন পরিশোধের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করে ।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল জলিল ও শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর সবুজ কানন এলাকার ডেল্টা স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ভাতা বৃহষ্পতিবার পরিশোধের কথা ছিল। শ্রমিকরা বেতন ভাতার জন্য বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে কারখানার গেইটে জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অবস্থানের পর কর্তৃপক্ষ বেতন ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা গেইটে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় কারখানার সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। বিকেলে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ৩০ এপ্রিল শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে কারখানা এলাকা ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এদিকে একই দিনে অনুরূপ অপর ঘটনায় গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা হারিকেন এলাকার আমরিন সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা মার্চ মাসের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে। তাদেরও বেতন ভাতা পরিশোধের পূর্ব নির্ধারিত দিন ছিল বৃহষ্পতিবার । তারা কারখানার সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিকেলে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেয় বলে জানান গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন ও শ্রমিকরা জানান,
অপর এক ঘটনায় একইদিন গাজীপুর মহানগরীর নাওজোর এলাকার পলিব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানার শ্রমিকরা সকল হতে বিক্ষোভ করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ওভারটাইম ভাতা ও মার্চ মাসের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ৩০ এপ্রিল শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করে ছুটি ঘোষণা করায় সৃষ্ট নানা জটিলতার কারণে বেশকিছু কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধ করতে পারে নি কর্তৃপক্ষ। এতে এসব কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ঘোষিত লকডাউন ভেঙ্গে মার্চ মাসসহ তাদের পাওনাদি পরিশোধের জন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে আসছে। তারা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের কোন নিয়ম কানুনই মানছেনা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের উদ্যোগে বেশ কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ব্যবস্থা নিয়েছে।