বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার মাত্র ৪০ দিনের মাথায় এসে দেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এখন পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সোমবার সারাদেশে শনাক্ত করা হয়েছে আরো ৪৯৭ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী। আর নতুন করে মারা গেছেন সাত জন।
বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত করা হয় গত ৮ মার্চ। আর করোনা আক্রান্ত রোগী হিসেবে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ১৮ মার্চ। কিন্তু আক্রান্তের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে এপ্রিলের শুরু থেকে। এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ থেকে মাত্র ২২ দিনের ব্যবধানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। যত দিনে গেছে বেড়েছে নমুনা সংগ্রহ একই সাথে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর এই মরণঘাতী ভাইরাসের সব থেকে ভয়াবহ প্রকোপে পড়েছে রাজধানী ঢাকায়।
জনবহুল ও নমুনা সংগ্রহ সহজলভ্য হওয়ায় শুধু ঢাকায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৪ শতাংশ। মৃত্যুর সংখ্যাতেও এগিয়ে আছে ঢাকা সিটি। ঢাকা সিটি ও নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন যথাক্রমে ৭৬ ও ৩৯ জন। আইইডিসিআর প্রকাশিত মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বর্তমানে ৬০টি। আজ নতুন আক্রান্ত জেলা হলো নাটোর ও ভোলা।
শুধু ঢাকা বিভাগেই সর্বমোট আক্রান্ত চার হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকা সিটিতে দুই হাজার ৭১৭, নারায়ণগঞ্জে ৬৯৯, গাজীপুরে ৩১৫, কিশোরগঞ্জে ১৯১, মাদারীপুরে ৩৬, মানিকগঞ্জে ১৫, মুন্সীগঞ্জে ৭৮, নরসিংদীতে ১৪২, রাজবাড়ীতে ১৪, ফরিদপুরে ৯, টাঙ্গাইলে ২৪, শরীয়তপুরে ২৩, গোপালগঞ্জে ৫০, ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ৮৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০১ জন। বিভাগটিতে তিন দশমিক ৮৭ শতাংশ করোনা রোগী পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম জেলায় ৫৬, কক্সবাজারে ১৩, কুমিল্লায় ৪২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৫, লক্ষ্মীপুরে ৩১, বান্দরবান ৪, নোয়াখালীতে ৫, ফেনী ৪, চাঁদপুরে ১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে ৪৫, নেত্রকোনায় ২৫, শেরপুরে ২৩, ময়মনসিংহ জেলায় ১০৮ জনসহ মোট ২০১ জন আক্রান্ত।
বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলায় ৩৮, বরগুনায় ৩০, পটুয়াখালীতে ২০, পিরোজপুরে ৭, ভোলায় ২, ঝালকাঠিতে ৫ জনসহ মোট ১০২ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। সিলেটের মৌলভীবাজারে ১২, সুনামগঞ্জে ১৫, হবিগঞ্জে ৪৮, সিলেট জেলায় ১৪ জনসহ মোট ৮৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
রংপুরের গাইবান্ধায় ১৭, নীলফামারীতে ১০, লালমনিরহাটে ২, কুড়িগ্রামে ৬, দিনাজপুরে ১৪, ঠাকুরগাঁওয়ে ৮, রংপুর জেলায় ২১, পঞ্চগড়ে ৪ জনসহ মোট ৮২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে রাজশাহী জেলায় ১০, জয়পুরহাটে ১০, বগুড়ায় ১৭, নওগায় ১, সিরাজগঞ্জে ২, চাপাইনবাবগঞ্জে ২ ও পাবনায় ২ জনসহ মোট ৪৪ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও খুলনায় ৮, যশোরে ২৬, ঝিনাইদহে ১১, চুয়াডাঙ্গায় ৮, বাগেরহাটে ১, মাগুরা ৪, মেহেরপুর ২, কুষ্টিয়া ১০ ও নড়াইলে ১৩ জনসহ মোট ৮৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বের সাথে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের জীবন যাত্রার চিত্র। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে প্রায় ৩৮০টি উপজেলা, ৪৬টি জেলা ও ৩টি বিভাগ। করোনায় দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে।