1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. editor@amadergouripur.com : Al Imran :
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ময়মনসিংহে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশী অস্ত্রসহ মাদক উদ্ধার গৌরীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, ২৪ ঘন্টায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরাম ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা।। আহ্বায়ক ফরহাদ, সদস্য সচিব রবিন শেখ হাসিনার শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খুন গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-আমিন, সম্পাদক বিপ্লব ময়মনসিংহে ট্রাক সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালক নিহত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শিমুর বিরুদ্ধে মামলা গৌরীপুরে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ খ্যাত সেই শ্যামল গ্রেফতার জুলাই বিপ্লবের কন্যাদের গল্প শুনলেন ড. ইউনূস

শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিকল্প ক্লাস পরীক্ষা সচল রাখতে হবে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৩৪ Time View

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগাম ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। তবে এই লম্বা ছুটিতে শিক্ষায় যাতে কোনো ধরনের স্থবিরতা চলে না আসে সেই বিষয়টির প্রতিও গুরুত্ব দিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনেরা। তাদের মতে প্রাতিষ্ঠানিক ছুটির মধ্যেও শিক্ষাখাত সচল রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে বিকল্প রূপরেখায় শিক্ষা কার্যক্রম বা বিকল্প ক্লাস পরীক্ষা যাতে সচল থাকে সেই বিষয়টির প্রতিও নজর দেয়া জরুরি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতোমধ্যে করোনার কারণে চার দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। ক্লাস পরীক্ষা সবই স্থগিত রয়েছে। করোনায় ছুটির কারণে প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা বাতিল করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলও প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এইসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। যদিও এই পরীক্ষা গত ২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কবে অনুষ্ঠিত হবে এই পরীক্ষা সেটিও এখন আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে চলতি বছর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না সেটি নিয়েও সংশয় রয়েছে। এই অবস্থায় আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দীর্ঘ ছুটির এই সময়ে শিক্ষা খাতের অপূরণীয় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিকল্প পথ খুুঁজে বের করতে পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন গতকাল সোমবার জানান, করোনার এই পরিস্থিতিতে বিকল্প পস্থায় শিক্ষার্র্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে। বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়গুলো যদিও এই প্রক্রিয়াটি আরো আগেই শুরু করেছিল কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে তা চালু রাখা যায়নি। তবে এখন যেহেতু একটি লম্বা ছুটির আভাস পাওয়া গেছে তাই আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে। তিনি করোনার এই দুর্যোগের মুহূর্তে বিকল্প কিছু প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে প্রথমত যারা অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারবে না তাদের পরীক্ষা আমরা পরে নেবো।

দ্বিতীয়ত অনলাইন শিক্ষার জন্য ফোরজি অত্যাবশ্যক নয়। ইতোমধ্যে আমরা গবেষণা করে দেখেছি , কেউ যদি শুধু ফিচার ফোন এবং টুজি কানেকশন দিয়েও অনলাইনে পড়তে পারে, তাহলে তার জন্য অনলাইন শিক্ষার বিকল্প এখন আর কিছুই নেই। পরীক্ষার ব্যাপারে শুধু এটাই বলব যে, আমাদের প্রচলিত পরীক্ষার ধারাই সবচেয়ে ভালো নিয়ম এটাও এখন আর কেউ বলে না। ‘ওপেন বুক টেস্ট’ পদ্ধতি আছে, অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক ও প্রজেক্টভিত্তিক মূল্যায়ন আছে- যেখানে কে কী মুখস্থ করে এসেছে, কে কী দেখে লিখল এসব একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। অতএব অনলাইনে পরীক্ষা শুধু সম্ভবই নয়, শিক্ষার পদ্ধতি হিসেবেও আমাদের আরো আধুনিক পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। যেমন: জুম অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস নেয়া যায়। সারাবিশ্বেই এটা চলছে। লম্বা ছুটির এই সময়ে শুধু শুধু বসে না থেকে আমাদেরকে এখন সেদিকেই যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, করোনার এই সময়ে সরকার ও টেলিকম কোম্পানিগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। দেশের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইডথের সামান্য অংশ উন্মুক্ত করে দিলেও অতি কম দামে টেলিকম কোম্পানিগুলো সেটুকু সংযোগ করিডর (বিশেষ শিক্ষা প্যাকেজ) হিসেবে দিতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা কম খরচে পর্যাপ্ত কানেকটিভিটি পাবে।

বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের (বিপিসি) সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান জানান, বর্তমানে যে দুর্যোগের মধ্যে আমরা আছি অতীতে এমন অনেক দুর্যোগ আমরা মোকাবেলা করেছি। শিক্ষাক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিবেশে যে ফলাফল আমরা পেতাম করোনার কারণে এ বছর হয়তো সেটা পাবো না। তবে এ কথা ঠিক যে, আমাদের বিকল্প পন্থা বের করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে বিকল্প চিন্তাভাবনা এখনি করতে হবে। তিনি বলেন, দু’টি বিকল্প পথ আমাদের সামনে খোলা আছে। একটি অটোপ্রমোশন আর অন্যটি হলো বছরের ছয় মাসের একটি সময়কে সেশন ধরে সেটিকে ড্রপ দেয়া। তবে সবগুলো বিষয়ই নির্ভর করবে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ওপর। তাই আমার পরামর্শ হলো সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল এবং শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে তাদের পরামর্শেই বিকল্প একটি রূপরেখা তৈরি করে সেই আলোকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা এগিয়ে নেয়া।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু গতকাল এই প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড এই সেøাগান সামনে রেখে শিক্ষা সেক্টরের স্থবিরতা কাটাতে সরকার এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এখনি কাজ শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, গত মার্চের ১৬ তারিখে একযোগে সব প্রতিষ্ঠান ছুটি দেয়ার আগে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ভর্তি কার্যক্রমই শেষ করতে পারেনি। তাই এখনি উচিত শিক্ষা সেক্টরকে সচল রাখতে বিকল্প একটি রূপরেখা তৈরি করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করা।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) মহাসম্পাদক প্রফেসর ড. এ কে এম আব্দুল্লাহ জানান, সরকার অনলাইনে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাস চালু করলেও সুফল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা, উন্নত বিশে^র আলোকে এই অনলাইন পাঠ পদ্ধতি আমাদের দেশে চালু হলেও তাদের মতো অবকাঠামোগত সুবিধা আমাদের দেশে এখনো নেই। ফলে উদ্যোগটি ভালো হলেও এর শতভাগ সুবিধা আমাদের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না। তাই পাবলিক পরীক্ষার মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশেষ করে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে দীর্ঘ এই ছুটির মধ্যে শিক্ষকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসতে হবে। স্কুলগুলোকে নিজেদের উদ্যোগে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে তাদের নিয়মিত পড়াশোনার তত্ত্বাবধান করতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার বাইরে থাকা ক্লাসগুলোকে নিজস্ব মূল্যায়ন পদ্ধতির আলোকে প্রমোশন দিতে হবে।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতিরি (বাকশিস) যুগ্ম সম্পাদক ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন জানান, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যদি স্কুল কলেজ বন্ধ রাখতে হয় তাহলে চলতি শিক্ষাবর্ষের বাকি যে দুই মাস সময় থাকবে সেই সময়ে সারা বছরের পড়ালেখা কাভার করা সম্ভব হবে না। তাই প্রত্যেক ক্লাসের শিক্ষার্থীদের অটোপ্রমোশন দেয়া ছাড়া বিকল্প থাকবে না। তবে যদি কোনো স্কুল বছরের শুরুতে অর্থাৎ করোনার কারণে বন্ধের আগে (জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চের ১৫ তারিখ পর্যন্ত) ক্লাস টেস্ট কিংবা মডেল টেস্ট নিয়ে থাকে তাতে প্রাপ্ত নম্বরের আলোকেও একটি মেধা তালিকা করে উপরের ক্লাসে প্রমোশন দিতে পারে।

অন্য দিকে এইচএসসি পরীক্ষা যদি চলতি বছরে নেয়া সম্ভব নাহয় তাহলে ২০২১ সালের পরীক্ষার সাথে একসাথেই ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সার্টিফিকেট আলাদা আলাদা হবে। আর এতে ২০২০ সালের পরীক্ষার্থীদের কোনো ইয়ার লস হবে না।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, এই মুহূর্তে এসএসসির ফল প্রকশের কাজটি আমরা এগিয়ে নিয়েছি। ফল প্রকাশের সামগ্রিক কাজের ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। এরপরে বড় কাজটি হচ্ছে ইতোমধ্যে স্থগিত হওয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেয়া। অবশ্য সেটার প্রস্তুতিও আমাদের নেয়া আছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যদি সেপ্টেম্বর মাসেও নেয়া হয় তারপরেও আমরা পরীক্ষা নেবো। তবে মাঝের এই ছুটির কারণে সাত মাসের এই লম্বা একটি গ্যাপ পূরণ করার জন্য উচ্চশিক্ষার পরের চার বছরের অনেক ছুটি আমাদের সমন্বয় করতে হবে, যাতে ছুটির এই গ্যাপ পূরণ করে নেয়া যায় এবং কোনো শিক্ষার্থীর জীবন থেকে একমাস সময়ও অপচয় না হয়। তিনি আরো জানান, কোনো পাবলিক পরীক্ষায় অটোপ্রমোশনের চিন্তা আমরা এখনো করছি না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Designed and developed by Mymensinghitpark