1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. editor@amadergouripur.com : Al Imran :
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ময়মনসিংহে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশী অস্ত্রসহ মাদক উদ্ধার গৌরীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, ২৪ ঘন্টায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরাম ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা।। আহ্বায়ক ফরহাদ, সদস্য সচিব রবিন শেখ হাসিনার শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খুন গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-আমিন, সম্পাদক বিপ্লব ময়মনসিংহে ট্রাক সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালক নিহত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শিমুর বিরুদ্ধে মামলা গৌরীপুরে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ খ্যাত সেই শ্যামল গ্রেফতার জুলাই বিপ্লবের কন্যাদের গল্প শুনলেন ড. ইউনূস

করোনার ফলে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক চাকরি হারাবেন!

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৩২ Time View

বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনেক দেশেই বিভিন্ন মাত্রার ‘লকডাউন’ চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে বিশ্বের কমপক্ষে ৮২টি দেশে সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন কার্যকর রয়েছে।

লকডাউনের ফলে এসব দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে রয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো থেকে শুরু করে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ ।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এর মধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছে, সারা বিশ্বে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে যাচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপের অনেক দেশে বাংলাদেশের বিশাল শ্রমবাজার রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কীভাবে এই শ্রমবাজারের ওপর প্রভাব ফেলছে?

কাজ নেই, খাবার নেই, চাকরি নেই
ওমান থেকে আবু জাফর নামের একজন বাংলাদেশি শ্রমিক বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “লকডাউন শুরুর পরেই মালিক জানিয়ে দিয়েছে, তাদের আর লোক লাগবে না, আমাদের দেশে যেতে বলেছে। অনেক টাকা খরচ করে গতবছর মাত্র এই দেশে এসেছি। এখনো তো দেনাও শোধ হয়নি।”

এখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না আবু জাফর।

সৌদি আরবে ফ্রি ভিসায় গিয়েছিলেন আবু হোসেন। তিনি জানাচ্ছেন, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই তার কোন কাজ নেই, তাই কোন আয়ও নেই। এই মাসে পরিবারের কাছে কোন টাকাপয়সা পাঠাতে পারেননি।

“এখানে অবস্থা খারাপ দেখতেছি। অনেক মানুষের কাজ নেই। অনেক কোম্পানি লোক ছাটাই করতেছে। এখন যে আমরা কিভাবে চলবো, তাই বুঝতে পারছি না।”
শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় না, ইতালি, ফ্রান্স, সাইপ্রাস, স্পেনের মতো ইউরোপের দেশগুলোয় থাকা অনেক অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক মানবেতর অবস্থায় পড়েছেন চলমান লকউনে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যাওয়া শ্রমিকরাও ছাটাইয়ের শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাংলাদেশী সাংবাদিকরা।

ইতালির ভেনিসে একটি আবাসিক হোটেলের মালিক আবেগ আল মামুন, যার প্রতিষ্ঠানে পাঁচজন বাংলাদেশি চাকরি করেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে তার প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

আবেগ আল মামুন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “এখানে সরকার কর্মীদের জন্য ৮০ শতাংশ বেতন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ মালিকের দেয়ার কথা। অনেক মালিক সেটাও দিতে পারছেন না। যাদের সর্বশেষ কোন চাকরি ছিল না বা চুক্তিহীন, তারা এরকম কোন সুবিধা পাচ্ছেন না।”

“ইতালিতে প্রায় একলক্ষ অবৈধ বাংলাদেশি আছে,যারা নানারকম ব্যবসা বাণিজ্য বা চাকরি করতো। লকডাউন শুরু হওয়ার পর তাদের কোনরকম কাজ নেই, আয় নেই।”

“যারা ব্যবসা বাণিজ্য করেন, তাদের ব্যবসা নেই, ফলে তারাও অনেকে আর কর্মীদের রাখতে পারবেন না। ফলে বৈধ বাংলাদেশিরাও বেকার হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”

তিনি জানাচ্ছেন, ফ্রান্স বা স্পেনেও যেসব বাংলাদেশি ছোটখাটো ব্যবসা বা চাকরি করেন, তাদের অবস্থাও একই রকম।

মালয়েশিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক আহমেদুল কবির বলছেন, মালয়েশিয়ায় কয়েক লাখ অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছে যারা নির্মাণ খাত, পর্যটন, ছোটখাটো ব্যবসাবাণিজ্যের সাথে যুক্ত। কিন্তু এখন তাদের কোন আয় নেই।

সরকারি সহায়তার ওপর টিকে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বাংলাদেশি। বাকি যারা রয়েছেন, তাদের অবস্থাও সুবিধার নয়।

“এখানে অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ব্যবসাবাণিজ্যে একটা মন্দা দেখা দেবে। তখন হয়তো কর্মী ছাটাইয়ের একটা প্রবণতা তৈরি হতে পারে। তার বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপরে,” বলছেন তিনি।

তিনি জানাচ্ছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে যদিও অনেককে খাবার দেয়া হচ্ছে, কিন্তু অনেক কর্মী অনলাইনে নিজেদের তালিকাভুক্ত করতে পারছেন না, তাই তারা সহায়তাও পাচ্ছেন না।

লকডাউনের মধ্যেই ওমান থেকে ২০০ বাংলাদেশি কর্মীকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি প্রতিবেদনে বলছে যে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এই বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে আগামী দুই মাসের মধ্যে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে যাচ্ছে। এতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় চাকরি হারাতে যাচ্ছে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ।

বর্তমানে বিশ্বের পূর্ণ বা খণ্ডকালীন মোট কর্মশক্তির প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পেশা কোন না কোনভাবে কোভিড-১৯ এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আমেরিকার দেশগুলোয় চাকরি হারাবে দুই কোটি ৪০ লাখ কর্মী, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় দুই কোটি (ইউরোপে এক কোটি ২০ লাখ), আরব দেশগুলোয় প্রায় ৫০ লাখ ও আফ্রিকায় এক কোটি ৯০ লাখ কর্মী।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, আরব ও এশিয়ার দেশগুলো চাকরিচ্যুতির মূল শিকার হবেন অভিবাসী শ্রমিকরা।

শ্রমবাজারে দীর্ঘমেয়াদি মন্দার আশঙ্কা

অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশি সংস্থা রামরুর চেয়ারপার্সন তাসনিম সিদ্দিকী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “বিভিন্ন দেশে ফর্মাল সেক্টরে যারা কাজ করছেন, যাদের সংখ্যা সামান্য, তাদের হয়তো ততোটা সমস্যা হবে না। কিন্তু যারা ফ্রি ভিসায় গেছেন, ছোটখাটো ব্যবসা করেন, ছোট চাকরি করেন, অনিয়মিত শ্রমিক, তারা এখন চরম সংকটে রয়েছেন।”

“আমরা জানতে পেরেছি, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় অনেক বাংলাদেশির কোন কাজ নেই। তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে, খালি হাতে দেশে ফিরে যেতে বলা হচ্ছে। এদের অনেকে মসজিদে গিয়ে থাকছেন, দাতব্য সংস্থার ওপর নির্ভর করে রয়েছেন।”

“এদের ভেতর আবার অনেককে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

তিনি বলছেন, এর একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে। কারণ এই লকডাউনের ফলে অনেক দেশ আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে – যেমন মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম কমে যাচ্ছে। ফলে এসব দেশ শ্রমিক কমিয়ে খরচ কমানোর চেষ্টা করবে।

অদূর ভবিষ্যতে অনেক অভিবাসী শ্রমিক ছাটাইয়ের শিকার হতে পারেন এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচীর প্রধান শরিফুল হাসান বলছেন, “সারা বিশ্বে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি কাজ করেন। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ কর্মী কাজ করেন মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশে।”

“আমাদের যতো লোক বিদেশে যায়, তাদের মধ্যে ২ শতাংশ হচ্ছেন চিকিৎসক, অধ্যাপক, ইঞ্জিনিয়ারের মতো পেশাদাররা। তারা মাস গেলে বেতন পারেন। বাকি যারা রয়েছেন তাদের অন্তত ৫০ শতাংশ অদক্ষ শ্রমিক।”

“তাদের কাজ রোজকার বা কয়েকদিনের চুক্তিভিত্তিক হয়। বাকি যারা ব্যবসাবাণিজ্য করতেন, তাদেরও কাজ বন্ধ রয়েছে।”

লকডাউনের ফলে কতো বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারাতে যাচ্ছেন, সেটা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। ফলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপাত্ত সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার কাছে নেই।

তবে শরিফুল হাসান বলছেন, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতিমাসে ৫০ হাজার কর্মী যেতেন। সেই হিসাবে গত তিনমাসে দেড় লাখ কর্মী যেতে পারেননি। এটা যতো দীর্ঘ হবে, ততো কর্মীদের না যেতে পারার সংখ্যাও বাড়বে।

তিনি বলছেন, ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দুই লাখের বেশি মানুষ দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে কতজন আবার ফেরত যেতে পারবেন, তা নিশ্চিত নয়।

“যেহেতু বাংলাদেশ প্রবাসী আয় বা বৈদেশিক কর্মসংস্থানের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের একটি, সেই হিসাবে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতিটাও কিন্তু শীর্ষ ১০ দেশের একটি হবে।”

কর্মসংস্থানের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাবের বিষয়টি একেক দেশের শ্রমবাজারে একেকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষক পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

”প্রথমত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি যত দীর্ঘায়িত হবে, ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর যত প্রভাব পড়বে, ততো শ্রম বাজারের ওপর প্রভাব পড়বে।”

তবে পরিস্থিতির স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এক্ষেত্রে কোন দেশ বিশেষ আলাদা কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রেমিটেন্সের ওপর প্রভাব

বিশ্বব্যাংক এর মধ্যেই সতর্কবাণী দিয়েছে যে, এই বছর বাংলাদেশে রেমিটেন্স ২২ শতাংশ কমে যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে গত মার্চ মাসে প্রবাসীরা ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছে যা চলতি অর্থবছরই শুধু নয় বিগত ১৫ মাসের মধ্যেও সর্বনিম্ন।

লকডাউনের ফলে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় থাকা বাংলাদেশি বেশিরভাগ শ্রমিক দেশে কোন অর্থ পাঠাতে পারছেন না। ফলে একদিকে তারা যেমন বিদেশে একপ্রকার বেকার হয়ে রয়েছেন, তাদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো পড়েছে সংকটে।

অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী বলছেন, “এরকম অনেক পরিবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। এই পরিবারগুলোর এখন আয়ের উৎস নেই। ভবিষ্যতে আয় কখন আসবে, সেটারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে এই পরিবারগুলো একপ্রকার খাদ্য নিরাপত্তার সংকটে পড়েছে।”

দেশের পুরো আয় থেকে ২২ শতাংশ রেমিটেন্স কমে যাওয়াও অত্যন্ত খারাপ বার্তা বহন করছে বলে তিনি বলছেন।

পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বড় একটি ধাক্কা হতে যাচ্ছে রেমিটেন্স। সেখানে একটা বিরাট ধ্বস নেমেছে।

”বাংলাদেশের মূল বাজার মূলত তিনটি। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আরেকটা পূর্ব এশিয়া। প্রথম দুইটা বাজার খুব খারাপ হয়ে পড়েছে।

“এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় সেখানে চাকরিচ্যুতি শুরু হয়ে গেছে। ফলে এসব দেশে বিপুল বাংলাদেশি শ্রমিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন।”

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচীর প্রধান শরিফুল হাসান বলছেন, এই রেমিটেন্স কিন্তু শুধুমাত্র দেশের জন্যই জরুরি নয়, এই অর্থ তাদের পরিবার, গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এতোগুলো মানুষের আয় না থাকলে, চাকরি হারালে তার প্রভাব অনেক দিক থেকে পড়বে।

তিনি বলছেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর অনেক দেশ হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করবে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় যাদের অর্থনীতি তেল নির্ভর, তেলের দাম অস্বাভাবিক পড়ে যাওয়ায় একটা সংকট তৈরি হয়েছে। এটা স্বাভাবিক না হওয়ায় সেখানকার কর্মীরা আবার নতুন কাজে যেতে পারবে না। সবমিলিয়ে একটা অনিশ্চয়তার তৈরি হয়েছে। সেটা কতটা ভয়াবহতা তৈরি করবে, সেটা সামনের দিনগুলোয় বোঝা যাবে।”

প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা যদি দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন, তাহলে এখানেও নতুন করে তাদের কাজের দরকার হবে। এ ব্যাপারে এখনি একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সরকারকে তাগিদ দিয়েছে রামরু।

বাংলাদেশ সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বিশ্বের শ্রমবাজারে করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাবের ব্যাপারটি নিয়ে তারা সচেতন রয়েছেন এবং নানা পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে।

“বিভিন্ন দূতাবাস থেকে আমার তথ্য নিয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে চাকরি হারিয়ে কতো মানুষ ফেরত আসতে পারে বা ক্ষতির শিকার হবে, সেটা আমরা বের করার চেষ্টা করছি।”

ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য এর মধ্যেই ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরি করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে নয় কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

“বিপদগ্রস্ত শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন কর্মী ফেরত এসেছেন, আরও কিছু কর্মী ফেরত আনা হচ্ছে। যারা ফেরত আসছেন বা আসতে যাচ্ছেন, তাদের কীভাবে ইন্টিগ্রেশন করা যায়, প্রশিক্ষণ দেয়া, আবার কীভাবে যেতে পারে, সামাজিক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়েও মন্ত্রণালয় থেকে একটা পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে,” তিনি বলছেন।

প্রবাসী শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হলে যাতে সহজ শর্তে ঋণ পান, সেরকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত যেসব দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক বেশি রয়েছেন, যেমন সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, দুবাই, কাতার ইত্যাদি দেশ থেকে বাংলাদেশে ১ লক্ষ যাত্রী এসেছেন।

মালদ্বীপ থেকে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেই দেশ থেকে ১৫ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক চাকরিচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত যেতে পারেন।

“আমাদের আসল সমস্যা হবে অনানুষ্ঠানিক খাতে যারা কাজ করেন, অদক্ষ শ্রমিক যারা আছেন, তাদের ফেরত আসার প্রবণতা বেশি হবে। আমরা সাধ্যমতো সমস্যাটি অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি।”

তিনি জানান, বাংলাদেশী বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে বেকার শ্রমিকদের খাবার বা আর্থিক সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Designed and developed by Mymensinghitpark