তবলিগি জামাতের প্রধান মাওলানা সাদের নামে সামাজিক দূরত্ব না মানার যে অডিও ক্লিপ মিডিয়া প্রচার করেছিল সেটা ফেক এবং এডিট করা, জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশ অপরাধ দমন শাখা জানায়, তদন্তে করে দেখা গেছে যে, তাবলীগ প্রধান মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর-তে উল্লিখিত একটি অডিও ক্লিপ, যাতে তিনি তাবলিগি জামাত সদস্যদের সামাজিক দূরত্বের নিয়ম এবং নিষেধাজ্ঞার আদেশ অনুসরণ না করার জন্য বলেছিলেন। এছাড়াও তার নামে বেশ কয়েকটি অডিও ফাইল ব্যবহার করে একসাথে যোগ করা হয়েছে। পুলিশ এখন সমস্ত অডিও ক্লিপকে একটি ফরেনসিক বিজ্ঞান পরীক্ষাগারে প্রেরণ করে। তাতে যে রিপোর্ট আসে সেখানে জানা যায় যে সেই অডিও ক্লিপ এডিট করা এবং ফেক। এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইংরেজি নিউজ পোর্টাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এসএইচও (হযরত নিজামুদ্দিন) মুকেশ ওয়ালিয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরটি নথিভুক্ত করেছিলেন, তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে “২১ মার্চ হোয়াটসঅ্যাপে মাওলানা মোহাম্মদ সাদের একটি অডিও রেকর্ডিং পাওয়া গিয়েছিল, যেখানে স্পিকারকে তার অনুসারীদের জিজ্ঞাসা করতে দেখা গেছে লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বকে অস্বীকার করা, এবং মার্কাজের ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নেয়া কথা বলতে”।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে আরো প্রকাশ করা হয় যে পুলিশ মারকাজ সদস্যের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে যেটাতে তাদের অডিও ক্লিপগুলো রাখা হয়েছিল। সেগুলো স্ক্যান করার পরে পুলিশ দেখতে পেয়েছে যে তিনটি ফর্মের মধ্যে ৩৫০টিরও বেশি অডিও ক্লিপ রয়েছে- মার্কাজ থেক অডিও ক্লিপগুলো তাদের অনুগামীদের পাঠানো হয় এবং তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে, একটি সূত্র জানিয়েছে।
পরিদর্শক সতীশ কুমারের নেতৃত্বে একটি দল, এফআইআর-এ উল্লেখ করা নির্দিষ্ট অডিওগুলোর সন্ধানের চেষ্টা করছে, এখন পর্যন্ত ল্যাপটপ থেকে এ জাতীয় কোনো ক্লিপ উদ্ধার করতে পারেনি যেগুলো সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং না মানার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, তদন্তকারীরা দেখতে পেয়েছেন যে অন্যান্য ঘটনা থেকে পুলিশ এবং ধর্ম সম্পর্কে সাদের মন্তব্যগুলো প্রসঙ্গের বাইরে।
এফআইআর-এ উল্লিখিত অডিও ক্লিপটিতে একজনকে বলতে শোনা যায় যে “আমাদের ধর্মের বিষয়ে লেখা না থাকায় সামাজিক দূরত্বের দরকার নেই”। “তদন্তকারী দলটি লক্ষ্য করেছে যে ভাইরাল অডিওটি বেশ কয়েকটি ক্লিপের মিশ্রণ, যা মিথ্যা ভাবে তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য সম্পাদনা ও ডক্টর করা হয়েছে। তারা আবার সমস্ত অডিও ক্লিপ শুনে এবং দেখতে পাওয়া যায় যে প্রায় ২০টির কাছ থেকে বিবৃতি ব্যবহার করা হয়েছে।
এর আগে স্পেশাল সিপি (অপরাধ) প্রবীর রঞ্জন বলেছিলেন, “আমরা একটি অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল পেয়েছি এবং এখন এটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রেরণ করছি। বেশ কয়েকটি সংস্থার সতর্কতা সত্ত্বেও তারা এই ইভেন্টটি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল তা প্রমাণ করার জন্য আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করছি।” কিন্তু শুক্রবার তাকে সাংদাবিকেরা ফোন করলে তিনি ফোন তুলেননি এবং কোনো জবাব দেননি।
সূত্র : টিডিএন