মেহেদীর রঙ না শুকাতেই থেমে গেলো নববধূর জীবনপ্রদীপ। নেপথ্যে সর্বনাশা পরকীয়া। বিয়ের দুই মাসের মাথায় স্ত্রীকে খুন করে লাশ বাড়ির ছাউনীর খুঁটির সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখে স্বামী ডাক দেয় প্রতিবেশীদের। বলে, ‘আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।’ লোকজন জড়ো হবার আগেই একই এলাকার দুই সন্তানের এক জননীকে নিয়ে পালিয়ে যায় পাষণ্ড স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের মজিদার পাড়ায়।
খবর পেয়ে লোহাগাড়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুল হক লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
লোহাগাড়া থানার ওসি জাকের হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঘটনাটি জিডি আকারে থানায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেলেই মামলা রুজু হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, বিয়ের আগ থেকে আনোয়ারের সাথে একই এলাকার প্রবাসী সৈয়দ আহমদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের পরকীয়া প্রেম ছিল। বিয়ের পর মুন্নী স্বামীর এসব বিষয় টের পেয়ে তাকে সুপথে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
মনোয়ারার মূল বাড়ি মিয়ানমার। তার পূর্বপুরুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আনোয়ার পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক।
নিহতের ভাই মাহফুজুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আনোয়ার ও তার পরকীয়া প্রেমিকা মনোয়ারা মিলে আমার বোনকে হত্যা করার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখে শোরগোল করতে থাকে। লোকজন জড়ো হলে আত্মহত্যার আলামত পাওয়ায় অবস্থা বেগতিক দেখে আনোয়ার ও তার প্রেমিকা দুই সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগম পালিয়ে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেক আশা-ভরসা নিয়ে সুখের সংসার করার আশায় আমার ছোটবোনকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সর্বনাশা পরকীয়ার কারণে আমার নিষ্পাপ বোনকে র্মিমমভাবে জীবন দিতে হলো। আমার বোনকে তো আর কোনো কিছুর বিনিময়ে ফিরে পাবো না। তবে আর কারো আদরের বোন যাতে এভাবে পরকিয়ার নির্মম বলি না হয় সেজন্য তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।’
পুরো গ্রামজুড়ে আনোয়ার ও তার পরকীয়া প্রেমিকার এহেন জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজ থেকে এ ধরনের নির্মমতা বন্ধের জন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, ‘ঘরের ছাউনি একদম নিচু। ওই ছাউনির খুঁটির সাথে ঝুলে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার বিষয়টি এলাকার কেউই বিশ্বাস করছে না।’