করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ইসরাইলের একটি শহরকে লকডাউন করা হয়েছে যেখানে কট্টরপন্থী ইহুদিরা বসবাস করে। ইসরাইলের মধ্যে এ শহরটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে।
যে শহরটিকে লকডাউন করা হয়েছে সেটির নাম বেনি ব্রাক এবং এটি তেল আভিভ শহরের উপকণ্ঠে।
এই শহরের বাসিন্দারা শুধু জরুরি প্রয়োজনে বাইরে আসতে পারবেন।
ইসরাইলের একজন সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, বেনি ব্রাক শহরে দুই লাখ মানুষ বসবাস করে। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশংকা করছেন।
এখন পর্যন্ত পুরো ইসরাইলে সাত হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরাযইল জুড়ে বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, তারা যাতে বাড়ির ১০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থান করেন। গণ-জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাড়ির বাইরে যেতে হলে মাস্ক কিংবা স্কার্ফ দিয়ে মুখ ঢেকে নিতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য আরো বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
নেতানিয়াহু এরই মধ্যে নিজের শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো অস্তিত্ব নেই। তারপরেও নেতানিয়াহু নিজেকে সেলফ আইসোলেশনে রেখেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইলের মন্ত্রীপরিষদের এক বৈঠকে বেনি ব্রাক শহরে চলাচলের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এই শহরটিতে প্রায় ৪৫০০ বয়স্ক মানুষ বসবাস করে। তারা ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে আশংকা করা হচ্ছে। এসব বয়স্ক ব্যক্তিদের সে শহর থেকে সরিয়ে কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারিত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে।
ইসরাইলে অনেক কট্টরপন্থী ইহুদিরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো জন্য সরকারের নির্দেশিত পদক্ষেপগুলো খুব ধীর গতিতে বাস্তবায়ন করছে। এনিয়ে অনেকের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
এসব কট্টরপন্থী ইহুদিরা বড় পরিবারের এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে। ধর্মীয় কারণে তারা ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও খুব এটা ব্যবহার করে না। ফলে বিশ্বে কী ঘটছে সে সম্পর্কে তাদের খুব একটা ধারণা নেই।
ইসরাইল জুড়ে বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করা হলেও কট্টরপন্থী ইহুদি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ধর্মীয় জমায়েত এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান অব্যাহত ছিল।
দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি নিয়ে কট্টরপন্থী ইহুদিদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে।
সূত্র : বিবিসি