দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। প্রতিষ্ঠার পর গত ৫০ বছরেও প্রতিষ্ঠানটিতে পেনশন স্কিম চালু হয়নি।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। চিঠিতে তিনি বলেছেন, দেশের টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অব্যাহত রাখতে ধানের উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সমজাতীয় প্রতিষ্ঠান কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে পেনশন স্কিম চালু আছে, কিন্তু ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পেনশন স্কিম চালু নেই। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানিয়ে আসছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের স্মারকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সিটি করপোরশন বা পৌরসভায় পেনশন সুবিধা প্রবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়। এর আলোকে ব্রি’র পেনশন স্কিম প্রবর্তন সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়। অর্থ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী এ সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ ২০১৯ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্রি’র পেনশন স্কিম চালু হলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে। ধানের উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে আরো বেশি ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত হবে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। বর্তমানে দেশে ৩৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হচ্ছে। এতে ব্রি’র অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই।
তিনি বলেন, একই ধরনের প্রতিষ্ঠান কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউিটে পেনশন স্কিম চালু থাকলেও ব্রি’র প্রায় ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখনও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
শাহজাহান কবীর বলেন, ২০১০ সাল থেকে এ নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেশকিছু তথ্য চাওয়া হয়েছিল, সেগুলোও দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।
তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। অন্যদের জন্য প্রণোদনা থাকলেও আমদের জন্য নেই। আমরা পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চফলনশীল ধানের জাত এবং ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
গবেষণা এবং জাত উদ্ভাবনে বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু পুরস্কারের মাধ্যমে সংস্থাটির কাজের অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর তিনবার স্বাধীনতা পুরস্কারসহ মোট ২২টি দেশি এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।