বগুড়ার ধুনট উপজেলায় স্ত্রী সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক থাকায় দিনদুপুরে ঘরে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আব্দুল খালেককে (৫৫) হত্যা করা হয়। নিহত আব্দুল খালেক উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি চকমেহেদী গ্রামের কেসমত আলীর ছেলে।
রোববার বিকেল ৪টায় ঘটনার মূলহোতা ঘাতক রফিকুল ইসলামকে (৪২) বগুড়া জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল হাকিমের আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে নিজের দোষ স্বীকার করেন। এই হত্যাকাণ্ডে রফিকুল ইসলাম একাই জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
ঘাতক রফিকুল ইসলাম ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের চকমেহেদী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। স্বীকারোক্তি রেকর্ড করে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক আনিছুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রফিকুল ইসলামের স্ত্রীর সাথে আব্দুল খালেকের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রফিকুল বারবার আব্দুল খালেককে স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলেন। তারপরও চুটিয়ে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যান আব্দুল খালেক। স্ত্রীর সাথে প্রেম করতে নিষেধ করায় আব্দুল খালেক কয়েক দফা রফিকুলকে মারপিট করেন। এ ঘটনা নিয়ে বিরোধ হয়ে রফিকুলের স্ত্রী ৫ জুলাই বাবার বাড়ি চলে যান। এতে আব্দুল খালেকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রফিকুল ইসলাম।
শনিবার দুপুর ২টায় দিকে আব্দুল খালেক নিজের ঘরের ভেতর টেলিভিশন দেখতে ছিলেন। এ সুযোগে রফিকুল ইসলাম ঘরে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে আব্দুল খালেকের মাথায় পরপর কয়েকটি আঘাত করেন। তখন আব্দুল খালেক চিৎকার দিয়ে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে রফিকুল ইসলাম হাতুড়ি ফেলে পালিয়ে যান।
আব্দুল খালেককে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেল ৫টায় আব্দুল খালেক মারা যান। সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে রফিকুল ইসলামকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রবিউল হাসান বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।