বাবার টাকা হাতিয়ে নিতে ফন্দি করেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধরা খেল পুত্র ও পুত্রবধূ। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা শিবগঞ্জ পৌরসভার বনতেঘরি গ্রামের। একটি চুরির অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে মূল ঘটনা।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম বদিউজ্জামাল জানান, ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে পেট্রোল বোমা হামলায় নিহত হন শিবগঞ্জের আফজাল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম। শহিদুলের পরিবারে স্ত্রী সাবিনা ও ২ ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত শহিদুলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকার ১০ লাখ টাকা প্রদান করে। তৎকালীন শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এতিম দুই শিশু ও তাদের মার ভবিষ্যৎ এবং সুখের কথা চিন্তা করে সাবিনাকে তার দেবর মোহাম্মদ ফারুকের সাথে বিয়ে দেয়। আর সরকারের দেয়া অনুদান ১০ লাখ টাকা সাবিনাকে ৫ লাখ, তার বাবা আফজাল হোসেনকে ৩ লাখ, আর দুই সন্তানের নামে ২ লাখ টাকা ভাগ করে ব্যাংকে এফডিআর করা হয়।
সাবিনা ও তার বর্তমান স্বামী ফারুক পিতা আফজাল হোসেনের তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করার ফন্দি আঁটতে থাকেন। স্বামী-স্ত্রী দুজন শলাপরামর্শ করে চলতি জুলাইয়ের ৬ তারিখ সাবিনার নামে থাকা পাঁচ লাখ টাকা সোনালী ব্যাংক বগুড়া থেকে তুলে এনে ঘরে রাখেন। গত ৯ জুলাই ওই ৫ লাখ টাকা সাবিনার স্বামী ফারুক ব্যাংক এশিয়ায় জমা রাখেন। গত ১০ তারিখ সাবিনা ওই ৫ লাখ টাকা চুরির নাটক সাজিয়ে শিবগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ হাতে পেয়ে চুরির ঘটনাটির বিষয়ে ওসির নেতৃত্বে তদন্তে নামেন তদন্ত ওসি ছানোয়ার হোসেন, এস আই মোস্তাফিজ ও আকবরসহ সঙ্গীয় ফোর্স। ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয় চুরির ঘটনাটি সাজানো হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে অভিযোগকারী স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা সবকিছু স্বীকার করেন। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ব্যাংক এশিয়ার কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা স্বীকার করেন সরকার কর্তৃক তাদের বাবা আফজাল হোসেনকে দেয়া ৩ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়ার জন্যই তারা এই চুরির নাটক সাজিয়ে থানায় অভিযোগ দেয়।
শিবগঞ্জ থানার (ওসি) এসএম বদিউজ্জামাল রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত স্বামী ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।