মানিকগঞ্জে চলতি বন্যায় ৮৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের তালিকায় রয়েছে আউশ, আমন, ভুট্টা, তিল ও সবজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় জানায়, বন্যার প্রথম পর্যায়ে ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মানিকগঞ্জ সদর, হরিরামপুর, দৌলতপুর, শিবালয়, ঘিওর, সিংগাইর এবং সাটুরিয়া উপজেলার ৪ হাজার ২শ ১৩ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।
এতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ১ হেক্টর জমির সবজি, ৪ হেক্টর জমির ভুট্টা, সিংগাইর উপজেলায় ২শ হেক্টর জমির বোনা আমন, সাটুরিয়া উপজেলায় ১৪৯ হেক্টর জমির ভুট্টা, ঘিওর উপজেলায় ৯শ হেক্টর জমির বোনা আমন, ৩০ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ২ হেক্টর জমির সবজি, দৌলতপুর উপজেলায় ৯শ হেক্টর জমির বোনা আমন, শিবালয় উপজেলায় ৯শ ৫০ হেক্টর জমির বোনা আমন, হরিরামপুর উপজেলায় ৯শ ৭০ হেক্টর জমির বোনা আমন, ৫ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ২২ হেক্টর জমির বোনা আউশ, ২ হেক্টর জমির সবজি, ২৭ হেক্টর জমির ভুট্টা এবং ৫০ হেক্টর জমির তিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০ জুলাই পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৬ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫শ হেক্টর জমির বোনা আমন, ৯ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ২০ হেক্টর জমির সবজি, সিংগাইর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৪শ হেক্টর জমির বোনা আমন, ৫০ হেক্টর জমির সবজি, সাটুরিয়া উপজেলায় ২০ হেক্টর জমির রোপা আমন (বীজতলা), ১শ ১০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৬শ হেক্টর জমির বোনা আমন, ৪শ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ১শ হেক্টর জমির সবজি, ঘিওর উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমির বোনা আমন, দৌলতপুর উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমির বোনা আমন, শিবালয় উপজেলায় ৩ হাজার ২শ হেক্টর জমির বোনা আমন, ১ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ১০ হেক্টর জমির সবজি, হরিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমির বোনা আমন বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষতির পরিমান নিরুপন চলমান রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম পর্যায় ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের সময় বন্যার পানি তেমন একটা প্রবেশ না করায় অল্প ক্ষতি হয়েছে। পরে দফায় দফায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ৬৫ কোটি ২৮ লাখ টাকার ফসলি ক্ষতি হয়েছে। দু’টি পর্যায়ে মোট ৮৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।
মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান আলী বিশ্বাস জানান, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কতদিন থাকবে তার উপর নির্ভর করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।