1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহের কাগজ প্রতিবেদক :
  2. editor@amadergouripur.com : Al Imran :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
গৌরীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, ২৪ ঘন্টায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরাম ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা।। আহ্বায়ক ফরহাদ, সদস্য সচিব রবিন শেখ হাসিনার শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খুন গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-আমিন, সম্পাদক বিপ্লব ময়মনসিংহে ট্রাক সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালক নিহত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শিমুর বিরুদ্ধে মামলা গৌরীপুরে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ খ্যাত সেই শ্যামল গ্রেফতার জুলাই বিপ্লবের কন্যাদের গল্প শুনলেন ড. ইউনূস ময়মনসিংহে ৮ দিন বন্ধের পর বিভিন্ন রুটে চালু হলো ট্রেন

শেরপুরে বুরুঙ্গা ব্যবসায়ীরা লোকসানরে মুখে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩
  • ১৭৭ Time View

১৫ জুলাই ২০২৩, কাগজ প্রতিবেদক, শেরপুর

শেরপুরে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদ, নদী, খাল ও বিলের পানি না বাড়ায় বুরুঙ্গা (বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ) বিক্রিতে চরম ধস নেমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই বছর যাবত এ অবস্থা চলমান থাকায় তারা কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে কারিগররা জানিয়েছেন, দিন দিন বাজারে বুরুঙ্গার চাহিদা কমতে থাকায় এ পেশার সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক এখন অন্য কাজের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা শহরের নয়ানীবাজার এলাকার দুর্গা মন্দিরের পাশে বাঁশ ও বেতের জিনিসপত্র বিক্রয়কারি জয়নাল আবেদীন আক্ষেপের সাথে বলেন, গত দুই বছর যাবত বুরুঙ্গা ব্যবসায়ীরা কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনাবৃষ্টি আর এ কারণে নদ, নদী, খাল ও বিলে পর্যাপ্ত পানি নেই। এজন্য শেরপুর সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীতে বুরুঙ্গা বিক্রিতে চরম ধস নেমেছে। তিনি আরো বলেন, ১৯৮৮ সালে তার পিতা নাসির উদ্দীন এ ব্যবসা শুরু করেন। ২০১২ সালে পিতার মৃত্যুর পর তিনি টানা ১১ বছর যাবত এ ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। বুরুঙ্গা বিক্রির পাশাপাশি তিনি বাঁশের তৈরি খালই, ধারাই, ডুল, পাখা, কুলা, ঝাকা, বেতের পাটি ও নারকেলের ঝাড়- বিক্রি করে আসছেন। এরমধ্যে টানা তিনমাস শুধু বুরুঙ্গা বিক্রি করেই তিনি সারা বছরের লভাংশ পেয়ে থাকেন। এবার তিনি ইসলামি ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আরডিএস) আওতায় এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১ হাজার ২শ পিছ বুরুঙ্গা কেনেন। এ পর্যন্ত ৯০ পিছ মাল বিক্রি হয়েছে। বাকি মাল গুদামে পড়ে আছে। এখন প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৮শ টাকা ঋণের কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবেন এ নিয়ে চিন্তায় আছেন। তার পরিচিত আরো ৯জন ব্যবসায়ী অন্তত ১১ লাখ টাকার মাল কিনে এখন ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে তিনি জানান। শ্রীবরদীর মিস্টার বলেন, জেলার শতাধিক ব্যবসায়ী বুরুঙ্গা কেনা-বেচার সাথে জড়িত। মৌসুম চলাকালিন প্রতিমাসে ১২ লাখ টাকার মাল পাইকারি হিসাবে বিক্রি করতেন। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এখন ২০ হাজার টাকার মালও তার বিক্রি হচ্ছে না। এজন্য তিনি আনাবৃষ্টি এবং চায়না রিং জাল আর কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহারকে দায়ি করেন।
ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার সাড়ে বারো হাজার পিছ বুরুঙ্গা কেনেন। চলতি আষাঢ় মাসেই সব মাল বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এখন গুদাম ভাড়া এবং শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার চাপ থাকায় কম দামেই বুরুঙ্গাগুলো বিক্রি করে দিতে চাইছেন। ঝিনাইগাতীর বাদশা মিয়া জানান, তিনি ও তার পরিবারের আরো ৬-৭ জন সদস্য বুরুঙ্গার ব্যবসা করার জন্য আশা, ব্রাক, আরডিএস ও পপি নামে বিভিন্ন এনজিও থেকে ১০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়ে মাল কিনেছেন। এখন সিংহভাগ মাল গুদামজাত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এগুলো ইঁদুরে কেটে নষ্ট করছে। নকলার তারাকান্দা এলাকার করিম মিয়া বলেন, বছরের তিন মাস বুরুঙ্গা বিক্রির ভরা মৌসুম। কারিগরদের কাছ থেকে চৈত্র ও বৈশাখ মাসে আমরা বুরুঙ্গা কিনে গুদামজাত করে ফেলি। আর জৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস জুড়ে দেদার বিক্রি করি। আকার ভেদে ৮০-৮০০ টাকায় প্রতি পিছ বুরুঙ্গ বিক্রি হয়। তিনি আরো বলেন, এবার তিনি ঋণ করে দুই হাজার পিছ বুরুঙ্গা কিনেছেন। দায় মেটাতে ৮০ টাকার মাল ৫০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এই ঋণ পরিশোধ করতেই এবার তিনি দেউলিয়া হয়ে যাবেন বলে জানান।
বুরুঙ্গা তৈরির কারিগর শ্রীবরদীর সোলায়মান, হাশেম ও খোকা মিয়া জানায়, উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের দহেরপাড়, গোপালখিলা ও চাউলিয়া এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার চার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বুরুঙ্গা তৈরির সাথে জড়িত। কারিগররা তিন পারা, পাঁচ পারা ও সাত পারা আয়তনের বুরুঙ্গা তৈরি করতেন। তারা আরো জানান, ওইসব এলাকার বুরুঙ্গার মান ভালো হওয়ায় শেরপুরের পাঁচ উপজেলা ছাড়াও জামালপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় লাখ লাখ পিছ বিক্রি হতো। কিন্তু করোনাকাল সময় থেকে অনাবৃষ্টি শুরু হওয়ায় ব্যবসা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কাজ না থাকায় এ পেশার সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিকদের মধ্যে কেউ ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালাচ্ছে আবার কেউ পোশাক শ্রমিকের কাজে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে এ পেশার সাথে জড়িতের প্রশিক্ষণ ও ঋণ দিয়ে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের শেরপুর জেলা শাখার উপ-ব্যবস্থাপক বিজয় কুমার দত্ত।##

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Designed and developed by Mymensinghitpark